ফাইল চিত্র।
কাঁথি পুরসভার প্রশাসনিক ভবন থেকে সারদার নথিপত্র উধাও হওয়ার অভিযোগ উঠল। কাঁথি শহরে সারদা গোষ্ঠীর ১৯ তলা আবাসনের অনুমোদন ও অন্যান্য সম্পত্তি সংক্রান্ত নথিপত্র মিলছে না বলে থানায়। লিখিত অভিযোগ করলেন বর্তমান পুরপ্রধান সুবল মান্না। ১২০বি, ৩৮০ ধারায় মামলা রুজু করেছে কাঁথি থানার পুলিশ।
বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার পৃথক ভাবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন কাঁথির পুরপ্রধান, উপ-পুরপ্রধান দু’জনেই। পুরপ্রধান সুবল মান্না বলেন, ‘‘সারদা নিয়ে সিবিআই তদন্ত চলছে। বেশ কিছু নথিপত্র তারা পুরসভার কাছ থেকে নিয়েছিল। তবে কী কী নথি সেখানে রয়েছে তা জানা নেই। ১৯তলা আবাসন তৈরির উপযোগী যোগ্যতা সম্পন্ন ইঞ্জিনিয়ারও কাঁথি পুরসভার নেই। তা সত্ত্বেও কী ভাবে সাইট প্ল্যান অনুমোদন করা হয়েছিল কিছুই আমরা জানি না।’’ পুরপ্রধান সঙ্গে জুড়েছেন, ‘‘সারদার আবাসন তৈরির জন্য অনুমোদন চেয়ে ৪০ লক্ষ টাকার যে ফি পুরসভায় জমা পড়েছিল, তার রশিদ অবশ্য এখানেই রয়েছে।’’
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কাঁথির উপ-পুরপ্রধান সুপ্রকাশ গিরি আবার বলেন, ‘‘সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে বিচারককে চিঠি লিখেছিলেন অনেক আগেই। সম্প্রতি সুদীপ্ত সেন প্রকাশ্যে এ-ও দাবি করেছেন যে সৌমেন্দু অধিকারীকে চেয়ারম্যান থাকাকালীন প্রচুর টাকা দিয়েছিলেন কাঁথি পুর এলাকায় একটি নির্মাণের অনুমোদন নেওয়ার জন্য। তারপরই পুলিশ-প্রশাসন সারদার ওই নির্মাণ সংক্রান্ত নথির খোঁজ খবর নিতে শুরু করে। তখনই জানা যায় নথিপত্র অনেক কিছুই উধাও হয়ে গিয়েছে। আমরা চাই সে সব সরানোয় যারা যুক্ত তাদের খুঁজে বের করুক পুলিশ।’’ কাঁথির এসডিপিও সোমনাথ সাহা বলেন, ‘‘সারদার নথি গায়েব সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পুরপ্রধান নিজেই করেছেন। মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।’’
প্রসঙ্গত, শুভেন্দু, সৌমেন্দু বিজেপিতে যাওয়ার পরই তাঁদের নাম জড়াচ্ছে একের পর এক দুর্নীতি মামলায়। সারদার আবাসনের নথি সরানোর অভিযোগ সেই তালিকায় নবতম সংযোজন। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করিয়ে দিচ্ছে, কাঁথিতে সারদা গোষ্ঠীর একটি অফিস ছিল। শহরে বেশ কিছু সম্পত্তিও ছিল তাদের। পাশাপাশি ২০ নম্বর ওয়ার্ডে সারদার একটি ১৯তলা কনক্লেভ তৈরির কথা ছিল। তার শিলান্যাসও হয়। তবে প্রাচীর দেওয়ার পরই ওই বহুতল নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পুরসভা সূত্রের দাবি, কাঁথিতে সারদার সম্পত্তি এবং কনক্লেভ নির্মাণ সংক্রান্ত যাবতীয় নথি একটি ফাইলে ছিল। কিন্তু সম্প্রতি ওই ফাইল থেকে বেশ কিছু নথি গায়েব হয়ে গিয়েছে। তবে এ ব্যাপারে জানতে প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা বর্তমানে বিজেপি নেতা সৌমেন্দুকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজেরও জবাব দেননি।