—ফাইল চিত্র।
হলদিয়া মহকুমায় একই সময়ে একই দলের নেতাদের পৃথক কর্মসূচি। রবিবার হলদিয়ার সিটি সেন্টার মোড়ে তৃণমূলের কর্মসূচি এবং মহিযাদলে শুভেন্দুর কর্মসূচিকে ঘিরে তৃণমূলের অন্দরের বিভাজন সামনে চলে এসেছে। দলের মধ্যে এ হেন কোন্দলে শেষমেশ হলদিয়ার উন্নয়ন আটকে যাবে না তো? শিল্পশহরের আনাচে কানাচে এখন এটাই প্রশ্ন।
২৯ নভেম্বর, রবিবার হলদিয়ার কদমতলা থেকে সিটি সেন্টার পর্যন্ত হলদিয়া টাউন যুব তৃণমূলের ব্যানারে মিছিল ও জনসভায় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী সুজিত বসু ও রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্যত জনপ্লাবন দেখা গিয়েছিল সেখানে। অন্যদিকে মহিষাদলে স্বাধীনতা সংগ্রামী রণজিৎ বয়ালের স্মরণে সভার ডাক দিয়েছিলেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। জমায়েত সেখানেও কম হয়নি। কিন্তু এই দুই কর্মসূচি কার্যত তৃণমূলের অন্দরের বিভাজনকে স্পষ্ট করে দিয়েছে বলেই মনে করছে হলদিয়াবাসী। যুব তৃণমূলের ডাকে ওই সভায় ছিলেন না হলদিয়ার পুরপ্রধান সহ একাধিক তৃণমূল কাউন্সিলর ও পুরপারিষদ। কার্যত যাঁরা শুভেন্দু ‘অনুগামী’ বলেই এলাকায় পরিচিত। যদিও পুরপ্রধান-সহ একাধিক কাউন্সিলর উপস্থিত না থাকলেও উপ পুরপ্রধান-সহ একাধিক কাউন্সিলর যাঁরা শুভেন্দু ‘বিরোধী’ হিসাবে পরিচিত ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন। ফলে পুরসভার মধ্যেই দুই গোষ্ঠীর বিভাজন ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। যার জের পুরসভার উন্নয়নমূলক কাজের ক্ষেত্রে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন পুরবাসী। এমনকী উন্নয়ন আটকে যাবে কি না সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খেতে শুরু করেছে শিল্পশহরে।
পুর এলাকার এক বাসিন্দার মতে, ‘‘যে ভাবে দিন দিন তৃণমূলের দু’ পক্ষের মধ্যে ফাটল দেখা দিচ্ছে তাতে উন্নয়ন ব্যাহত হতে বাধ্য।’’ এর আগেও একাধিক কাউন্সিলর ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। তাঁরা জানিয়েছিলেন, পুরপ্রধান ও এক পুর পারিষদের ঘনিষ্ঠ হতে না পারলে নাকি এলাকায় উন্নয়ন করা যায় না। বোর্ড মিটিংয়ে টাকা বরাদ্দ হলেও সেই টাকা হাতে আসে না। ফলে উন্নয়নের কাজ ব্যাহত হয়।
উল্লেখ্য, হলদিয়া পুর এলাকায় একাধিক সমস্যা রয়েছে বলে নানা সময়ে অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা। রাস্তা খারাপ থেকে জলের সমস্যা দীর্ঘদিনের। তৃণমূলের এমন গোষ্ঠীকোন্দলে সেই সমস্যা আরও বাড়বে কি না সেই আশঙ্কার মেঘ পুর এলাকাজুড়ে।
পুরপারিষদ আজিজুর রহমান বলেন, ‘‘২৯ নভেম্বর সিটি সেন্টার মোড়ে ওই সভায় থাকতে পারিনি কারণ ব্যক্তিগত কাজে হলদিয়ার বাইরে ছিলাম। তা ছাড়া আমার ওয়ার্ডে জনসভা হলেও আমায় আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।’’ যদিও উপ-পুরপ্রধান ও হলদিয়া শহর তৃণমূল ব্লক সভাপতি সুধাংশু শেখর মণ্ডলের দাবি, ‘‘হলদিয়া শহর যুব তৃণমূলের পক্ষ থেকে সভার আয়োজন করা হয়েছিল। দলের সব নেতৃত্বকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে কাউন্সিলর ও পুর পারিষদদের অনেকে কেন আসেননি তার কারণ আমি জানি না।’’