অ্যালবাম হাতে। নিজস্ব চিত্র
মুখোমুখি দেখা হয়নি কোনওদিন। তবু প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বাগ্মিতা, পাণ্ডিত্য, বাচনভঙ্গি আকর্ষণ করত সাবিত্রীজানা ষণ্ণিগ্রহীকে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণবের লেখা, ছবি সংগ্রহ করে সবিতা বানিয়েছেন অ্যালবাম। সেই অ্যালবামে ফুল, মালা দিয়ে তাঁকে স্মরণ করলেন গোয়ালতোড়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা সবিতা।
পিয়াশালা অঞ্চলের মেটালডোবা গ্রামে বাড়ি মধ্য ষাটের সাবিত্রীজানা ষণ্ণিগ্রহীর। ছিলেন স্থানীয় হুমগড়-চাঁদাবিলা হাইস্কুলের বায়োলজির শিক্ষিকা। ২০১৬ সালে অবসর নিয়েছেন। দুই ছেলে চাকরি সূত্রে বিদেশে। স্বামী শ্যামলকান্তি ছিলেন ওই হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক। সাবিত্রী স্কুল জীবন থেকেই প্রণব মুখোপাধ্যায়ের খুব ভক্ত। প্রণবের আদ্যোপান্ত ঠোঁটস্থ সাবিত্রীর। প্রণববাবুকে নিয়ে আস্ত একটা অ্যালবামই তৈরি করে ফেলেছেন এই প্রাক্তন শিক্ষিকা। তাঁর অ্যালবামে স্থান পেয়েছে বাংলা-ইংরেজি সংবাদপত্রে ও ম্যাগাজিনে প্রণবের ছবি, তাঁকে নিয়ে খবর, প্রতিবেদন, বক্তব্য।
সাবিত্রীর বাপেরবাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না এলাকায়। প্রয়াত বাবা কালীপদ জানা কংগ্রেসের কর্মী ছিলেন। স্কুলে পড়ার সময় সাবিত্রী বাবার মুখে বারবার শুনতেন প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কথা। সাবিত্রীর কথায়, ‘‘আমাদের বাড়িতে দুটো করে সংবাদপত্র আসত, সেখানে তাঁর ছবি দেখি, খবর পড়ি। সেসব কাঁচিতে করে কেটে খাতার মধ্যে রাখতাম।’’ বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতেও চলত তাঁর এই কাজ। এখন সেইসব কাটিংয়ের সংখ্যাটা পাঁচশো পেরিয়ে গিয়েছে। সাবিত্রী বলেন, ‘‘উনি (প্রণববাবু) যেমন ছিলেন অসম্ভব ভদ্র - সজ্জন রাজনীতিবিদ, তেমনি তাঁর পাণ্ডিত্য, বাচনভঙ্গি আমাকে আকৃষ্ট করত। এমন রাজনীতিবিদ যাঁকে দেখলে শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে যায়।’’
মঙ্গলবার মেটালডোবায় নিজ বাড়িতে অ্যালবাম থেকে পেপার কাটিং ছবি বের করে নিভৃতে ফুল-মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মরণ করেছেন প্রিয় মানুষটিকে। পাশে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক স্বামীও।