প্রকল্পের খরচ ১১৫ কোটি

রূপনারায়ণের জল মিলবে সদর শহরে 

রূপনারায়ণ নদের গা ঘেঁষে প্রাচীন শহরের পুরসভার বয়সও দেড়শো বছর পেরিয়েছে কবেই। কিন্তু এত বছরেও পানীয় জলের উপায় বলতে ভরসা ছিল ভূগর্ভের জল। কিন্তু জলের স্তর ক্রমশ নামতে থাকায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল আরও গভীরে নলকূল বসানোর প্রবণতা।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৭:০০
Share:

রূপনারায়ণের ধারে এখানেই গড়ে উঠবে প্রকল্প। নিজস্ব চিত্র।

রূপনারায়ণ নদের গা ঘেঁষে প্রাচীন শহরের পুরসভার বয়সও দেড়শো বছর পেরিয়েছে কবেই। কিন্তু এত বছরেও পানীয় জলের উপায় বলতে ভরসা ছিল ভূগর্ভের জল। কিন্তু জলের স্তর ক্রমশ নামতে থাকায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল আরও গভীরে নলকূল বসানোর প্রবণতা। যার ফলে বাড়ছিল পাম্পের সাহায্যে জল তোলার খরচ। তাই ভূগর্ভস্থ জলের উপর নির্ভরতা ছেড়ে শহরেরই পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রূপনারায়ণ থেকে জল তুলে তা পরিস্রুত করে সরবরাহের পরিকল্পনা নিয়েছিল তমলুক পুরসভা। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় প্রকল্পের জন্য জমি ও অর্থ জোগানের সমস্যা।

Advertisement

দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই তা নিয়ে চলছিল বিস্তর টালবাহানা। শেষ পর্যন্ত জমির সংস্থান হতেই প্রকল্প গড়তে প্রায় ১১৫ কোটি টাকার বরাদ্দ অনুমোদন করল রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে দক্ষিণচড়া শঙ্করআড়া এই প্রকল্প গড়ে তোলা হবে বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে। এর জন্য প্রয়োজনীয় প্রায় ৩ একর জমি কেনা হচ্ছে। তমলুকের পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘‘ভূগর্ভস্থ জলের পরিবর্তে রূপনারায়ণের জল তুলে পরিস্রুত করে তা সরবরাহের জন্য প্রকল্প গড়া হবে। এর জ্য প্রায় ১১৫ কোটি টাকার বরাদ্দ অনুমোদন করেছে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। প্রকল্পের জমি কেনার জন্য পুরসভা ও পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর এক কোটি টাকা করে দেবে। আর জলপ্রকল্প গড়ার খরচের বাকি টাকা দেবে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর।

পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের এই জেলা সদরের পুরসভার বয়স দেড়শো পেরিয়েছে। পুরসভার ২০টি ওয়ার্ডে বর্তমানে বাসিন্দার সংখ্যা ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে। ২০০২ সালে অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলা ভাগে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সদর হিসেবে স্বীকৃতির পর থেকে তমলুক শহরে নতুন বাড়ি তৈরির সংখ্যা দ্রুতহারে বেড়েছে। ফলে জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে পানীয় জলের চাহিদাও দ্রুত বেড়েছে। আগে শহরবাসীর জলের চাহিদা মেটাতে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর পানীয় জল সরবরাহ করত। কিন্তু তখন জনসংখ্যা তুলনায় কম ছিল। শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানীয় জল বলতে নলকূপই ছিল উপায়। বাসিন্দাদের জলের চাহিদা মেটাতে পুরসভা ১৯৮১ সাল নাগাদ ভূগর্ভস্থ জল তুলে পাইপলাইনের মাধ্যমে তা সরবরাহ শুরু করে। বর্তমানে পুর এলাকায় ৩৪টি পাম্প হাউসের মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ জল তুলে সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে।

Advertisement

পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, শহরে জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধির জেরে ভূগর্ভস্থ জল তোলার পরিমাণও বহুগুণ বেড়েছে। এই অবস্থায় শহরবাসীর চাহিদা মেটাতে গিয়ে ভূগর্ভের জলে টান পড়েছে জলস্তর নেমে যাওয়ায়। পাশাপাশি এই বাবদ পুরসভার খরচও বেড়ে গিয়েছে। তাই ভবিষ্যতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কথা মাথায় রেখে বাসিন্দাদের পানীয় জলের সরবরাহের জন্য রূপনারায়ণ নদের জল তুলে তা পরিস্রুত করে সরবরাহের প্রকল্প গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement