প্রতীকী ছবি।
এক সময় ছিলেন এলাকার বিধায়ক। পরিচিত ছিলেন ‘দাদার অনুগামী’ হিসাবে। ‘দাদা’ শুভেন্দু অধিকারীর সেই ‘অনুগামী’কে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে তাঁর বিরুদ্ধেই ব্যবহার করতে চাইছে তৃণমূল। তাই দীর্ঘ দু’বছর বাদে পুরনো দল তৃণমূলে সক্রিয় হলেন খেজুরির প্রাক্তন বিধায়ক রণজিৎ মণ্ডল। শুক্রবার রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে রণজিতকে দলে সক্রিয় হওয়ার কথা ঘোষণা করলেনজেলা নেতৃত্ব।
এদিন কাঁথির ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে একটি সাংবাদিক সম্মেলন আয়োজন করা হয়। সেখানে রণজিৎ, কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা বিধায়ক তরুন মাইতি, রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি, জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক উপস্থিত ছিলেন। রণজিৎ প্রসঙ্গে মন্ত্রী অখিল বলেন, ‘‘কিছুদিন ধরে রণজিৎ তৃণমূলে সক্রিয় হতে চেয়েছিলেন। রাজনীতির জন্য উনি অনেক কিছুই ত্যাগ করেছেন। তাই এদিন রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ পেয়ে তাঁকে দলে সক্রিয় করা হল।’’
২০০৭ সালে নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলন পর্ব থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর কাছের লোক হিসাবে রণজিৎ পরিচিত ছিলেন। ২০২০ সালে যে সময় শুভেন্দুর সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব ক্রমশ বেড়েছে, খেজুরিতে অরাজনৈতিক ব্যানারে 'দাদার অনুগামী' হিসাবে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর কর্মসূচি করতে দেখা গিয়েছিল রণজিৎকে। পরে শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর বিধানসভা ভোটের আগে নন্দীগ্রামে বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয় বর্গীয়র সভায় রণজিৎ পদ্মা শিবিরে যুক্ত হতে গিয়েছিলেন বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। কিন্তু বিজেপি কর্মীদের একাংশের প্রবল আপত্তিতে তা সম্ভব হয়নি। এরপর থেকেই রণজিৎ রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে যান। আর নন্দীগ্রামের পাশের বিধানসভা খেজুরি বিধানসভা ভোটে হাতছাড়া হয় শাসকদলের। গত দু’বছরে খেজুরিতে বিজেপির সমর্থন উত্তরোত্তর বেড়েছে। তাই এখন রণজিৎকে সক্রিয় করে পুরনো জমি ফিরে পেতে মরিয়া রাজ্যের শাসকদল। উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগে ভগবানপুরেও এক দাদার অনুগামী তথা স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য মানব পড়ুয়া তৃণমূলে সক্রিয় হয়েছিলেন।
এদিন দলের পতাকা হাতে নেওয়ার পর রণজিৎ বলেন, ‘‘যা বলার রাজ্যের মন্ত্রী এবং দলের জেলা সভাপতি বলেছেন। আমি সংগঠন যা দায়িত্ব দেবে সেই দায়িত্ব পালন করে যাব।’’ রণজিতের তৃণমূলে সক্রিয় হওয়ার ঘটনায় রাজ্যের শাসকদলকে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক তাপস কুমার দোলুই বলেন, ‘‘বিধায়ক থাকাকালীন খেজুরিতে যেভাবে দুর্নীতি, চুরি এবং নানা রকম অপকর্মে আষ্টেপৃষ্ঠে ছিলেন, তাতে বিজেপি কখনই তাঁকে দলে নিত না। ভোটের আগে অপকর্ম ঢাকা দেওয়ার জন্য প্রাক্তন বিধায়ককে তাঁর দলের লোকেরাই দু’বছর বসিয়ে রেখেছিলেন। এখন আবার পঞ্চায়েতের আগে ভোট লুট করার ষড়যন্ত্র সফল করার জন্য সক্রিয় ভূমিকায় আনা হচ্ছে।’’