সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার তিনটি দেহ। —নিজস্ব চিত্র।
সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে উদ্ধার হল নাবালক-সহ তিন জনের দেহ। শনিবার সকালে এ নিয়ে শোরগোল পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা ব্লকের চকরাধাবল্লভ গ্রামে। ইতিমধ্যে তিনটি দেহকে চিহ্নিতও করা গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতদের নাম সুজন সরেন (১৫), বদ্রীনাথ হেমব্রম (৫৮) এবং বাপি বাস্কে (৪৫)। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘সেপটিক ট্যাঙ্কে কী জন্য এঁরা নেমেছিলেন, তার তদন্ত শুরু হয়েছে। তিন জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।’’ যে বাড়ির সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে দেহ উদ্ধার হয়েছে, তার মালিক রবি মুর্মুকে আটক করেছে পুলিশ।
সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে তিন তিনটি দেহ উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে স্থানীয়েরা নানা অভিযোগ করছেন। তাঁদের দাবি, সকালে সেপটিক ট্যাঙ্কে নেমেছিল নাবালক সুজন সরেন। বেশ কিছু ক্ষণ কেটে যাওয়ায় ওই কিশোর উঠে না আসায় বদ্রীনাথ তাকে উদ্ধার করতে নামেন। তিনিও উঠে না আসায় বাপি সেপটিক ট্যাঙ্কে নামে। পর পর তিন জন ওই সেপটিক ট্যাঙ্কে প্রবেশ করলেও কেউই উঠে আসতে পারেননি। এই খবর ছড়িয়ে পড়ে স্থানীয়দের মধ্যে। খবর যায় ডেবরা থানায়। পরে স্থানীয়দের তৎপরতায় তিন জনকে উদ্ধার করে ডেবরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। কিন্তু, কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তিন জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুজনের বাড়ি শ্রীরামপুরে। বাকি দু’জনের বাড়ি রাধাবল্লভ গ্রামে। আবগারি দফতরের হাত থেকে বাঁচার জন্য সেপটিক ট্যাঙ্কে চোলাই মদের সরঞ্জাম লুকিয়ে রাখা হত বলে অভিযোগ। স্থানীয়েরা মনে করছেন, সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে ওই সব সরঞ্জাম তুলতে গিয়েই এই দুর্ঘটনা। এই ঘটনা নিয়ে জেলা পরিষদের নারী শিশুকল্যাণ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ শান্তি টুডু বলেন, ‘‘শুনেছি, তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আবগারির ওসি ইনচার্জকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। প্রশাসনের তরফ থেকে যাতে নজরদারি চালানো হয় এই চোলাই কারবারিদের বিরুদ্ধে, সেটা বলা হয়েছে।’’ কানুরাম হাঁসদা নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘সেপটিক ট্যাঙ্কে বিষাক্ত গ্যাসের জন্য তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। নাবালককে উদ্ধার করতে গিয়ে বৃদ্ধ এবং আরও এক জনের মৃত্যু হয়েছে।’’ মৌমিতা মণ্ডল নামে আরও এক জন বলেন, ‘‘শুনেছি ওই এলাকায় চোলাই মদের ব্যবসা হয়। খবর শুনে গিয়ে দেখলাম তিন জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে।’’ ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।