—প্রতীকী চিত্র।
বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হলেন এক জন। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর-১ ব্লকের পালবাড়া পশ্চিমবস্তি এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, এই ঘটনায় আহত হয়েছেন শেখ নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। গুরুতর জখম অবস্থাতেই তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন বলে খবর। অন্য দিকে, বিস্ফোরণের খবর পেয়ে এলাকায় ছুটে গিয়েছে পুলিশ বাহিনী। যদিও বিস্ফোরক তৈরির সঙ্গে জড়িতদের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। সব মিলিয়ে এলাকায় উত্তেজনা তুঙ্গে।
শেখ এসারুল নামে এক স্থানীয় ব্যক্তির কথায়, “দুপুরে খেতে বসার সময় আচমকা বিস্ফোরণে আওয়াজ শুনতে পাই। খাবার ফেলে ছুটে গিয়েছিলাম। দেখি, আমার তুতো দাদা নজরুল ইসলামের বাড়ি ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছে। ওর শরীরও আগুনে প্রায় ঝলসে গিয়েছে। এমন অবস্থা দেখে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। ওর চিকিৎসার জন্য নিয়ে আমরা বন্দোবস্ত করতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু ও যেতে চায়নি। হঠাৎ বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।’’ এসারুলের দাবি, সবাই নজরুলকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান যে, পঞ্চায়েত ভোটে এক নির্দল প্রার্থীই তাঁকে বোমা বানাতে বলেছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভোট ঘিরে বার বার অশান্ত হচ্ছে এলাকা। বৃহস্পতিবারই পটাশপুরের পূর্ব পালপাড়া বুথে নির্দল প্রার্থী দাঁড়ানো নিয়ে অশান্তি শুরু হয়। বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার না করা হলে ভোট বয়কটের ডাক দেন এলাকাবাসী। ওই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পাশের বুথে আবারও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে সরব হয়েছেন স্থানীয়রা।
উল্লেখ্য, পটাশপুরের অদূরে গত ১৬ মে এগরার খাদিকুলে বাজি বিস্ফোরণে ১১ জনের মৃত্যু হয়। মারা যান বাজি কারখানার মালিক কৃষ্ণপদ ওরফে ভানু বাগ। ঘটনার ১১ দিন পরে এলাকায় যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন না করলেও সেখান থেকে প্রায় ৯০০ মিটার দূরে আলিপুর মৌজায় একটি সভাস্থলে তিনি মৃতের পরিজনের সঙ্গে দেখা করেন। বাজি কারখানার মালিক তথা নিহত ভানুর পরিবারকে বাদ দিয়ে সেখানে মমতা বাকি ১০ জন মৃতের পরিবারের হাতে আড়াই লক্ষ টাকার চেক এবং হোম গার্ডের চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন। কিন্তু ক্ষতিপূরণ পেয়েও প্রিয়জন হারানোর বেদনা ভুলতে পারছে না তারা। বরং তারা বলছে, আগে পুলিশি পদক্ষেপ করা হলে এই দুর্ঘটনা ঘটত না।