গোলাপ বাগানে ফুল তুলতে ব্যস্ত চাষিরা। — নিজস্ব চিত্র।
বাহারি উপহারে সেজেছে দোকান। রেস্তোরাঁয় বিশেষ মেনু। সোনার গয়নার দোকানে বিশেষ ছাড়। ভালবাসার দিন ঘিরে ব্যবসায় জোয়ার আনতে নানা আয়োজন। কিন্তু ভ্যালেন্টাইনস্ ডে-তে যে জিনিসের কদর সব থেকে বেশি, সেই লাল গোলাপের দাম এ বার ঠেকেছে তলানিতে। দিন দশেক আগেও যেখানে একশোটি গোলাপের দাম ছিল ৩০০ টাকা, সেটাই এখন এসে ঠেকেছে ৩০-এ। এ ক্ষেত্রে ভিলেন, হঠাৎ করে পড়ে যাওয়া গরম।
প্রতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারির সময়টায় বাড়তি লাভের আশায় থাকেন মেদিনীপুরের জকপুরের গোলাপ চাষিরা। গত বছর ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তেও একশোটি গোলাপ বিক্রি হয়েছে ৩৫০ টাকায়। কিন্তু এ বার একেবারে অন্য ছবি। গোলাপ চাষি দিলীপ হাজরা, অশোক হাজরা, সন্তু হাজরারা বলছিলেন, ‘‘দিন দশেক আগেও ভাল বাজার ছিল গোলাপের। বাধ সাধল গরম। এই আবহাওয়ায় গোলাপের ফলন খুব বেড়ে যায়। সেটাই হয়েছে। সংক্ষরণের ব্যবস্থা না থাকায় কম দামে ফুল বেচে দিতে হচ্ছে।’’
জকপুরে গোলাপ চারার ব্যবসা হয় সারা বছর। এখানকার বাগিচা থেকে ফুল যায় কলকাতায়। তারপর দেশের নানা প্রান্তে। এলাকায় গোটা দশেক গোলাপ বাগিচা রয়েছে। সেখানে মূলত মিনুপাল ও মন্টিচিম প্রজাতির গোলাপ চাষ হয়। বিকেলে লম্বা ডাঁটি সমেত ফুল কেটে রাখা হয়। তারপর ভোর তিনটের ট্রেন ধরে চাষিরা যান কলকাতার জগন্নাথ ঘাটের ফুল বাজারে। চাষিরা জানালেন, সারা বছর এক বিঘের জমিতে গোলাপ চাষে খরচ হয় দেড় লক্ষ টাকার মতো। আর ফুল বিক্রি করে পাওয়া যায় প্রায় তিন লক্ষ টাকা। দিলীপবাবুর কথায়, ‘‘একশো টাকায় একশো পিস গোলাপ বিক্রি হলেই যথেষ্ট। প্রতি বিঘেয় তাহলে বছরে দেড় লাখ টাকার মতো লাভ থাকে।’’
কিন্তু ফুল সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় প্রেমের মরসুমেও ফুলের দাম পড়ে যাচ্ছে। লাভ কমছে। কিন্তু জকপুরের মতো গোলাপ চাষের এলাকাতে কেন কোনও হিমঘর নেই?