বছরের পর বছর এমন রাস্তাই ভরসা নস্করদিঘির বাসিন্দাদের। ছবি: দিগন্ত মান্না
সম্প্রতি প্রকাশিত তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি দীপ্তি জানার আত্মজীবনীতে তৃণমূল সরকারের আমলে পাঁশকুড়ায় উন্নয়ন না হওয়ার সমালোচনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এখনও স্থানীয় মানুষজনকে হাঁটু জল-কাদা পেরিয়েই চলাচল করতে হয়। ব্লক সভাপতির অভিযোগ যে অমূলক নয়, তার নমুনা দেখা গেল পাঁশকুড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের নস্করদিঘিতে। খোদ পঞ্চায়েত প্রধানের গ্রামের প্রধান রাস্তাই আজ পর্যন্ত ঢালাই হয়নি। বেহাল রাস্তায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
পাঁশকুড়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের নস্করদিঘি থেকে শঙ্খটিকরি পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১০ ফুট চওড়া একটি মোরাম রাস্তা আছে। স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার নস্করদিঘি, শঙ্খটিকরি গ্রামের পাশাপাশি কেশাপাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাজুবাড়, শিমুলহান্ডা গ্রামের মানুষ ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। ২০১৮ সালে পাঁশকুড়া-১ পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। তার আগে ওই পঞ্চায়েত বামেদের দখলে ছিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, তৃণমূলের চার বছরেও রাস্তায় মোরাম পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। ফলে রাস্তা জুড়ে তৈরি হয়েছে অসংখ্য গর্ত। কয়েক দিনের সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তাটি কার্যত চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বেহাল রাস্তায় মাঝেমধ্যেই উল্টোচ্ছে মেশিন ভ্যান, টোটো। জখম হচ্ছেন মানুষজন।
পাঁশকুড়া-১ ও কেশাপাট পঞ্চায়েতের এলাকার গ্রামগুলি ফুল চাষের জন্য বিখ্যাত। গ্রামে যেমন ফুলচাষিরা রয়েছেন তেমনি গ্রামের বহু মানুষ ফুল ব্যবসার সাথে যুক্ত। প্রতিদিন বাগান থেকে ফুল তুলে ওই রাস্তা ধরেই ফুলচাষি ও ফুল ব্যবসায়ীদের ফুলবাজারে যেতে হয়। বেহাল রাস্তার কারণে গ্রামে ঢুকতে চায় না কোনও অ্যাম্বুল্যান্স। স্থানীয় মানুষজন থেকে কৃষক প্রত্যেককেই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন প্রতিদিন। নস্করদিঘি গ্রামের বাসিন্দা সুদর্শন দাস বলেন, ‘‘ভোট এলেই নেতারা ঢালাই রাস্তার গল্প শোনায়। ভোট মিটে গেলে আবার সব চুপ। কারও পাত্তা পাওয়া যায় না। পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ি নস্করদিঘি গ্রামেই। রাস্তা সংস্কারের ব্যাপারে তিনি কী করছেন?’’ স্থানীয় ফুল ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘বর্তমান প্রধানের আমলে রাস্তা একবারও মেরামত হয়নি। ফুলের বোঝা নিয়ে বেহাল রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা চাই অবিলম্বে রাস্তা ঢালাই করা হোক।’’
পাঁশকুড়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কমলা ষণ্ণিগ্রাহি বলেন, ‘‘রাস্তাটি জেলা পরিষদ থেকে ঢালাই করা হবে বলে টেন্ডার হয়ে গিয়েছিল। কোনও অজ্ঞাত কারণে সেই টেন্ডার বাতিল হয়ে যায়। ফের রাস্তাটি ঢালাই করার জন্য বিডিও এবং স্থানীয় বিধায়কের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।’’