বৃষ্টিতে এমনই দশা হয় রাস্তার। — নিজস্ব চিত্র।
জোড়াতালি দেওয়া রাস্তায় বৃষ্টি হলেই বিপত্তি!
পিচ উঠে বেরিয়ে পড়ে খানাখন্দ। জলের মধ্যে গর্ত কোথায় বোঝা দায়। গর্তে গাড়ির চাকা আটকে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটে। তারপরেও হুঁশ নেই প্রশাসনের। ছবিটা মেদিনীপুর-কেশপুর রাজ্য সড়কের।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বছর কয়েক আগেও রাস্তাটির হাল একইরকম খারাপ ছিল। তখন রাস্তায় জোড়াতাপ্পি দিয়ে সংস্কার কাজ হয়। একটা বর্ষা পেরোনোর পর ফের রাস্তায় খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। খারাপ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন নিত্যযাত্রীরা। এক নিত্যযাত্রী সোমনাথ রায় বলেন, “এই রুটে গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে। তবে রাস্তার হাল ফেরেনি। ফলে, প্রায়শই সমস্যা হয়। গর্তে পড়ে গাড়ি দুলতে থাকে।” আর এক নিত্যযাত্রী তনুশ্রী পালের অভিযোগ, “রোজ অনেক লোক এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করেন। নতুন করে রাস্তাটি তৈরি হলে অনেকে উপকৃত হবেন। দুর্ভোগ কমবে।”
এক বাস মালিকের কথায়, “একটু ভারী বৃষ্টি হলে রাস্তাটির হাল আরও খারাপ হয়ে যায়। জলে জমে থাকায় খানাখন্দগুলো দেখাও যায় না। সপ্তাহ কয়েক আগেও তো এটা বাস চলাচলের অযোগ্য হয়ে উঠেছিল। একপ্রকার ঝুঁকি নিয়েই বাস চালাতে হয়েছে।” তাঁর কথায়, “পশ্চিম মেদিনীপুরে যে কয়েকটি রাস্তা খুব গুরুত্বপূর্ণ, তারমধ্যে মেদিনীপুর- কেশপুর অন্যতম। ঘাটাল, চন্দ্রকোনা রুটের বাসগুলো এই রাস্তা দিয়েই চলাচল করে। এমন রাস্তায় তো গাড়ি চলাচলের নিয়ন্ত্রণ রাখাও কঠিন।”
বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতি বলেন, “মেদিনীপুর থেকে কেশপুর রাস্তাটি সংস্কারের অভাবে জীর্ণ। খানাখন্দ বেশি হলে রাস্তায় বাস চালাতে সমস্যা হয়। বেহাল রাস্তায় বাস চললে মালিকদের ক্ষতির মুখ দেখতে হয়।” মৃগাঙ্কবাবুর কথায়, “রাস্তাটি নতুন করে তৈরি হলে ভালই হবে।” জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি মানছেন, “রাস্তাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখন গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। ফলে কিছু সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। তাই নতুন করে রাস্তাটি তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে।”
জেলা প্রশাসনের দাবি, সমস্যার কথা অজানা নয়। সমস্যা সমাধানে ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেমন? জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি বলেন, “মেদিনীপুর-কেশপুর রাস্তাটি নতুন করে তৈরি করা হবে। এ জন্য পরিকল্পনাও হয়েছে। আশা করা যায়, পুজোর পরপরই কাজ শুরু হবে।” শৈবালবাবুর কথায়, “এটা খুব বড় কাজ! একটু সময় লাগবে।”
জেলা প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, “জেলার খুব কম রাস্তাই এ ভাবে নতুন করে তৈরি হয়েছে। মেদিনীপুর-কেশপুর রাজ্য সড়কের হাল খারাপ। মাঝেমধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটছে। তাই সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে রাস্তাটি নতুন করে তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে।” প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, মেদিনীপুর থেকে কেশপুরের দূরত্ব ২০ কিলোমিটারের কিছুটা বেশি। এই রাস্তাটি নতুন করে তৈরি করতে খরচ হতে পারে প্রায় ৯৮ কোটি টাকা। প্রয়োজনীয় অর্থের জন্য রাজ্যের কাছে আর্জিও জানানো হয়েছে। কবে এই রাস্তার হাল ফেরে, সেটাই দেখার!