Tourists

Tourist: রাজবাড়ির নাটমন্দিরে স্বাগত

রাজবাড়ির ভেঙে যাওয়া প্রাচীন নাট-মন্দির ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে পর্যটন স্থল। এ দিন সেই ইতিহাস ও পর্যটন স্থলটি উদ্বোধন হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

দাঁতন শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৯:২৫
Share:

নবরূপে: সেজে উঠেছে মনোহরপুর রাজবাড়ির নাট-মন্দির। নিজস্ব চিত্র

পর্যটক টানতে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে দাঁতনের প্রাচীন স্থাপত্য ও মূর্তিগুলিকে। সেই লক্ষ্যে এক ধাপ এগোল দাঁতন ১ ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতি। শুক্রবার দাঁতনের প্রায় সাড়ে চারশো বছর আগের মনোহরপুর রাজবাড়ির প্রাঙ্গণে হল বিশেষ অনুষ্ঠান। রাজবাড়ির ভেঙে যাওয়া প্রাচীন নাট-মন্দির ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে পর্যটন স্থল। এ দিন সেই ইতিহাস ও পর্যটন স্থলটি উদ্বোধন হল। ছিলেন দাঁতনের বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধান, কেশিয়াড়ির বিধায়ক পরেশ মুর্মু, দাঁতন ১ বিডিও চিত্তজিৎ বসু, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনন্ত মাণ্ডি প্রমুখ। রাজা রামচন্দ্র রায় বীরবর নামাঙ্কিত প্রাচীন নাট-মন্দিরের ধ্বংসাবশেষকে সংরক্ষণ করে এলাকাটি সুদৃশ্য করা হয়েছে।

Advertisement

সেখানে ফলকে লেখা হয়েছে রাজবাড়ি ও তার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। এই কাজে উদ্যোগী হয়েছিল দাঁতন ১ ব্লক প্রশাসন, পঞ্চায়েত সমিতি, মনোহরপুর পঞ্চায়েতের পাশাপাশি দণ্ডভুক্তি অ্যাকাডেমি। ১৫৭৫ সালে দাঁতনে মোগল-পাঠান যুদ্ধের সময় আকবরের সেনাপতি টোডরমল পরিচালিত সেনাবাহিনীর অন্যতম সেনা ছিলেন লছমিকান্ত (লক্ষ্মীকান্ত) উত্তররাও। যুদ্ধ শেষে রাজস্থান নিবাসী লছমিকান্ত স্বদেশে ফেরেননি। পরবর্তীতে দাঁতনে জমিদারির প্রতিষ্ঠা করেন। সেই রাজবংশের দ্বাদশ পুরুষ সুরেশচন্দ্র রায় বীরবর মনোহরপুরে রাজবাড়ির সামনে পিতা রামচন্দ্র রায় বীরবরের স্মৃতিতে ১৯২৬ সালে তিনতলা বিশিষ্ট একটি আধুনিক ‘রাজা রামচন্দ্র নাট্যমন্দির’ গড়ে তুলেছিলেন। রামচন্দ্র দয়ালু রাজার পাশাপাশি সঙ্গীতজ্ঞ, সাহিত্যিক ও যাত্রানুরাগী ছিলেন। তাঁর ছিল শখের যাত্রাদল। পুত্র সুরেশচন্দ্র পিতার অনুসারী ছিলেন। পিতার মৃত্যুর পরে তিনি এই নাটমন্দির স্থাপন করেন। কলকাতার বিখ্যাত স্টার থিয়েটারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল এই নাট্যশালার।

এখানে শিশির ভাদুড়ি-সহ বিখ্যাত অভিনেতারা অভিনয় করেছেন। প্রতি বছর দুর্গাপুজায় তিনদিন, লক্ষ্মীপুজোয় সাতদিন ও দোলপূর্ণিমায় সাতদিন ধরে থিয়েটার হত। বসত সাহিত্যসভাও। কিন্তু সেই বৃহৎ এই নাট্যশালা ১৯৪২ সালের ঝড়ে ধুলিস্যাৎ হয়েছিল। শুধু দাঁড়িয়ে রয়েছে প্রবেশদ্বারের দু’টি স্তম্ভ ও কিছু ভগ্নাবশেষ। এ দিন সেটাই পর্যটন ক্ষেত্র হিসেবে ইতিহাস-প্রেমী মানুষের কাছে উন্মুক্ত করা হল।

Advertisement

গবেষক সন্তু জানা বলেন, ‘‘শেষ পর্যন্ত কাজটি বাস্তবায়িত হয়েছে। ভাল লাগছে।’’ পর্যটকেরা এখানে আসতে পারবেন। ঘুরে দেখতে পারবেন প্রাচীন রাজবাড়ি, নাট-মন্দিরের অংশ। তার জন্য পায়ে হাঁটার পথের পাশাপাশি এলাকাটি ঘিরে সুদৃশ্য করতে ফুলের বাগান করা হয়েছে। বসার জায়গাও করা হয়েছে। স্থানীয় বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধান বলেন, ‘‘ইতিহাস সংরক্ষণে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।’’ দাঁতন ১’এর বিডিও চিত্তজিৎ বসু বলেন, ‘‘সকলের উদ্যোগে ও সহযোগিতায় কাজটি সম্পন্ন হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement