প্রতীকী ছবি
মার্চ থেকে জুন— এই চার মাসে ১৭,৬৮৮ ইউনিট রক্তের জোগান দরকার। এমনই বার্তা দিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাকে সতর্ক করল রাজ্য। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, সম্প্রতি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ওই সতর্কবার্তা পৌঁছেছে জেলাশাসকের দফতর এবং জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতরে। এরপর জেলা থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা শুরু হয়েছে।
গরমের সময়ে ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতে এমনিতেই রক্তের আকাল চলে। সামনে পুরভোট হওয়ার কথা। তাই, এ বার বেসরকারি আয়োজনে হওয়া রক্তদান শিবিরের সংখ্যা কমবে বলেই মনে করছে বিভিন্ন মহল। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, সেই কথা মাথায় রেখেই ওই সতর্কবার্তা দিয়েছে রাজ্য।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘সামনের মাসগুলিতে রক্তের সঙ্কট দেখা দিতে পারে। সেটা মেটাতে কী করণীয় তা স্থির করতে জেলায় বৈঠকও হয়েছে।’’ সঙ্কট এড়াতে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হচ্ছে বলে জানান তিনি। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘গরমের সময়ে রক্তের চাহিদা গড়ের থেকে দশ শতাংশ বাড়তে পারে। জোগান ঠিক রাখতে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।" জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, রক্তের জোগান স্বাভাবিক রাখতে প্রথম পর্যায়ে জেলার ২৪টি হাসপাতালে রক্তদান শিবির করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল, ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল এবং ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক রক্ত সংগ্রহ করে। এরমধ্যে সবথেকে বেশি রক্ত সংগ্রহ করে মেদিনীপুর মেডিক্যালের ব্লাড ব্যাঙ্ক। এখানে বছরে গড়ে ২০,৯৪৬ ইউনিট ও মাসে গড়ে ১,৭৪৬ ইউনিট রক্ত জমা হয়। জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, গত কয়েক বছরের চাহিদা- জোগানের পর্যালোচনা করে দেখা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুরে জেলায় বছরে গড়ে ৪৪,২১৩ ইউনিট রক্ত দরকার হয়। সংগ্রহ হয় গড়ে ৪৪,২২০ ইউনিট। মাসে সংগ্রহের পরিমাণ থাকে গড়ে ৩,৬৮৫ ইউনিট। এর প্রায় পুরোটাই হয় রক্তদান শিবিরের মাধ্যমে। এই চাহিদারই হেরফের হয় গরমকালে। মার্চ থেকে জুন— এই সময়ের মধ্যে মাসে গড়ে ৪,৪২২ ইউনিট রক্তের প্রয়োজন হয়। বাড়তি চাহিদা মেটানোর জন্য এই সময়ে রক্তদান শিবির আয়োজনে জোর দেওয়া হয়।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, সাধারণত প্রতি শিবির থেকে গড়ে ৫০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ হয়। সেই হিসেবে এই চার মাসে গড়ে ৮৮টি শিবির করতেই হবে। জেলায় রক্তের জোগান স্বাভাবিক রাখতেই রাজ্য থেকে ওই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।