চাষের জমি নয় পুকুর! বীজতলা তৈরি নিয়ে সঙ্কটে চাষি। কোলাঘাটের উত্তর জিয়াদা এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
প্রাক বর্ষার বৃষ্টি শুরু হয়েছে একদিন আগেই। ইতিমধ্যেই কয়েক দফার ভারী বৃষ্টিতে জলমগ্ন পাঁশকুড়া ও কোলাঘাট ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। যত্রতত্র গজিয়ে ওঠা ভেড়ি এবং একাধিক বিকল স্লুইস গেটের সৌজন্যে জল জমা জমিতে নষ্ট হচ্ছে বীজতলা।
গত কয়েক বছরের খতিয়ান দেখলে নির্দিষ্ট সময়ে শুরু হয়নি বর্ষা। তবে এ বছরের চিত্রটা একেবারেই আলাদা। কয়েকদিন আগে থেকেই জেলায় শুরু হয় প্রাক বর্ষার বৃষ্টি। বুধবার থেকে কয়েক দফা ভারী বৃষ্টি হয় জেলায়। ক্রমশ বাড়ছে বৃষ্টির পরিমাণ। এদিকে, আমন চাষের জন্য অনেকে চাষি জমিতে বীজতলা ফেলেছিলেন। কিন্তু বেহাল নিকাশি এবং বেহাল স্লুইস গেটের জন্য পাঁশকুড়া ও কোলাঘাটের প্রায় ১০০টি মৌজাতেই জল থই থই করছে। ফলে বহু জায়গায় জলে ডুবে নষ্ট হয়ে গিয়েছে বীজতলা।
কৃষকেরা জানাচ্ছেন, কোলাঘাটের সিদ্ধা-১, ২, বৃন্দাবনচক, খন্যাডিহি, সাগরবাড়, দেড়িয়াচক ইত্যাদি এলাকার ৫০টি মৌজায় জল জমেছে। পাঁশকুড়ার কেশাপাট, পাঁশকুড়া-১, ঘোষপুর এলাকার বেশ কিছু মৌজাও জলের তলায়। এলাকার কৃষকদের অভিযোগ, যত্রতত্র ভেড়ি গজিয়ে ওঠা ও বিভিন্ন খালের অকেজো স্লুইস গেটের জন্য জল বেরোতে পারছে না।
কোলাঘাটের দেউলবাড় স্লুইসগেট, তমলুক ব্লকের গঙ্গাখালি খালের উপরে থাকা স্লুইস গেট বন্ধ না করতে পারায় খাল থেকে জল ঢুকছে মাঠে, কোথাও আবার মাঠের জল খালে যেতে পারছে না। কোলাঘাটের পরমানন্দপুর গ্রামের কৃষক প্রভাংসু মণ্ডল বলেন, ‘‘আমন চাষের জন্য বীজতলা ফেলেছিলাম। দু’দিনের বৃষ্টিতে জল জমে সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে।" বাঁকাডাঙা গ্রামের দয়াল জানা বলেন, ‘‘যেভাবে মাঠে জল জমে রয়েছে তাতে বীজতলা প্রস্তুত করা সম্ভব নয়।’’
সাধারণত জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই পরিমাণ বৃষ্টিপাত অস্বাভাবিক কোনও ঘটনা নয়। কিন্তু বেহাল নিকাশির জন্য বদলে গিয়েছে মাঠের পরিবেশ। যার খেসারত দিতে হচ্ছে কৃষকদের। উদ্ভূত সমস্যা প্রসঙ্গে সেচ দফতরের পাঁশকুড়া ১-এর বিডিও ললিত চৌধুরী বলেন, ‘‘স্লুইস গেটগুলির মেরামতির কাজ খুব দ্রুত শুরু হবে। তাতে সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করিছি।’’