প্রতীকী ছবি।
মাসখানেক আগে দলে সাংগাঠনিক রদবদলের পরে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক অবস্থান ঘিরে চলছে নানা জল্পনা। তাঁর দলহীন জনসংযোগ সেই জল্পনা আরও উস্কে দিয়েছে। এ বার দলের অভ্যন্তরেই প্রশ্ন উঠল অধিকারী পরিবারের তৃণমূলে অবস্থানটা ঠিক কী! কর্মিসভায় শাসক দলের বিধায়কে তা নিয়ে সটান প্রশ্নও করলেন এক অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি।
রবিবার তৃণমূলের ভগবানপুর বিধানসভার বুথ ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন হয় বাজকুল মিলনী কলেজে। হাজির ছিলেন ভগবানপুরের বিধায়ক অর্ধেন্দু মাইতি। সম্মেলনে আড়গোয়াল গ্রাম পঞ্চায়েতের ভারপ্রাপ্ত প্রধান তথা অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি অপরেশ সাঁতরা বলেন, ‘‘আমি এবং এলাকার যুব সমাজ বিভ্রান্ত। জেলায় দলের মেরুদণ্ড শিশির অধিকারী এবং শুভেন্দু অধিকারীর রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট নয়। এ সম্পর্কে বিধায়ক কিছু বার্তা দিন।’’
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে শুভেন্দু দলীয় কর্মসূচি ও সরকারি অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলছেন। সমান্তরাল ভাবে তাঁর ব্যক্তিগত জনসংযোগ নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। এক দিন আগেই নেতাইয়ে গিয়ে কার্যত সরকারের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর ক্ষোভে মান্যতা দিয়েছেন রাজ্যের এই মন্ত্রী। নন্দীগ্রামে ব্যক্তিগত ভাবে পুজো কমিটিগুলিকে সরকারের অতিরিক্ত অর্থ সাহায্য করেছেন নগদে। সব মিলিয়ে দলের অভ্যন্তরেও যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, তা স্পষ্ট অপরেশের প্রশ্নে। অপরেশ দুটি অঞ্চলের পরিচালনার দায়িত্ব প্রাপ্ত তৃণমূল নেতা এবং একাধিকবার পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষও হয়েছেন। জানা যাচ্ছে তাঁর প্রশ্নের জবাবে বিধায়ক অর্ধেন্দুর বার্তা, ‘‘দল ক্ষমতায় থাকলে আপনার কাছে লোকেরা আসবে। আর দল ক্ষমতায় না থাকলে কেউ আসবে না।’’
জেলায় অধিকারী পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ভগবানপুরের বিধায়কের এমন মন্তব্য যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে জেলার রাজনৈতিক মহল। কর্মী সম্মেলনের ব্যাপারে সোমবার অপরেশ বলেন, ‘‘বিধায়কের কাছে শুভেন্দুবাবুর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে যে বিভ্রান্তি চলছে, সে সম্পর্কে স্পষ্ট বার্তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি সেই বক্তব্যের ধারে কাছে না গিয়ে যে মন্তব্য করেছেন তা আমি মেনে নিতে পারিনি। এমনকি, সভায় উপস্থিত তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ও মেনে নিতে পারেনি।’’
তবে শুভেন্দুকে উদ্দেশ্য করে তিনি এমন কিছু বলেননি বলেই দাবি অর্ধেন্দুর। ভগবানপুরের বিধায়কের ব্যাখ্যা, ‘‘শুভেন্দু এখন রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। শিশির অধিকারী জেলা তৃণমূলের সভাপতি। ওঁরা দুজনেই তৃণমূলে রয়েছেন। উনি (অপরেশ) যে প্রশ্ন করেছিলেন, তার উত্তরে একথা বলিনি। সাধারণত প্রতি বৈঠকে দলের কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করতে এ ধরনের বার্তা দিয়ে থাকি। কাউকে নির্দিষ্ট করে কিছু বলিনি।’’