তমলুকের মানিকতলা মোড়ে যান শাসনে চালকেরা। —নিজস্ব চিত্র।
‘সেফ ড্রাইভ, সেভ ড্রাইভ’ লেখা নীল রঙের টি-শার্ট পরে রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করছেন কয়েকজন যুবক। তাঁদের কিছুক্ষণ দেখলেই বোঝা যাচ্ছে, ট্রাফিক পুলিশের মতো দক্ষ হাতে যান চলাচল সামাল দিতে পারছেন না তাঁরা। আর পারবেনই বা কী করে! ওই ব্যক্তিরা তো পেশায় গাড়ির চালক। পথ নিরাপত্তা এবং নিয়মকানুনের গুরুত্ব বোঝাতে সোমবার তাঁদেরকেই ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকায় নামানো হল।
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রতিদিনই বিভিন্ন গাড়ির চালক গতি নিয়ন্ত্রণ ট্রাফিকের অন্য নিয়মকানুনে পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকার করেন। কেউ কেউ ট্রাফিক পুলিশের তোয়াক্কা না করেই নিয়ম ভেঙে রাস্তায় গাড়ি চালান। কিন্তু এতে বিপদের সম্ভবনা যে কতখানি রয়েছে এবং ট্রাফিক পুলিশের গুরুত্ব কতটা, তা হাতেকলমে বোঝাতে জমা কুড়ি চালককে পথে নামাল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ট্রাফিক পুলিশ। এ দিন বিকেলে গেল তমলুকের মানিকতলা মোড়ের কাছ হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক এবং তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের সংযোগস্থলে যান চলাচল সামলান ওই চালকেরা।
জেলা ট্রাফিক পুলিশ জানাচ্ছে, বাস, ট্রেকার-সহ বিভিন্ন গাড়ির চালকদের এ দিন প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার পাঠ দেওয়া হয়। তাঁদের সঙ্গে অবশ্য ছিলেন জেলা ট্রাফিক পুলিশ বিভাগের আধিকারিকেরা। তবে ‘আসল কাজ’ করেন নীল টি-সার্ট অস্থায়ী ‘ট্রাফিক পুলিশে’রা। তাঁরাই মোড়ের মাথায় দাঁড়িয়ে হাত দেখিয়ে গাড়ি চালকদের বোঝাচ্ছিলেন সিগন্যালের গুরুত্ব। এ দিন বিকেল ৫টা থেকে সন্ধ্যে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত শহরের গুরুত্বপূর্ণ ওই মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা পালন করেন ওই গাড়ি চালকরাই। হেলমেটহীন মোটরসাইকেল চালকদের হেলমেট পরার অনুরোধ করেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এদিন ট্রাফিক সামলানো এক বাস চালক শেখ আমিনুল বলেন, ‘‘বাস চালানোর সময় অনেক যাত্রী তাড়াতাড়ি যাওয়ার জন্য জোরে বাস চালাতে বলেন। এর ফলে অনেক সময় রাস্তায় সিগন্যাল অমান্য করেই আমরা বাস চালিয়ে নিয়ে চলে যাই। কিন্তু এতে কতখানি দুর্ঘটনার সম্ভবনা থাকে, তা বুঝলাম।’’ আমিনুলের কথায়, ‘‘ট্রাফিক পুলিশ হাতে দেখিয়ে গাড়ি থামাতে বললে দেরি হওয়ার কারণে আমরা রেগে যাই। কিন্তু যাত্রীদের নিরাপদে পৌঁছানো তার চেয়েও অনেক জরুরি, তা আজকে শিখলাম।’’ টোটো চালক দেবনাথ ভৌমিক বলেন, ‘‘ট্রাফিকের অনেক নিয়মকানুন জানতাম না। আজ এখানে এসে ট্রাফিকের সিগন্যাল ও পুলিশের হাত দেখে কীভাবে গাড়ি থামাতে হয়, তা জানতে পারলাম।’’
গাড়ি চালকদের হাতেকলমে প্রশিক্ষণের দ্বায়িত্বে ছিলেন জেলা ট্রাফিক পুলিশ আধিকারিক প্রদীপ মণ্ডল ও ট্রাফিক অফিসার কল্যাণ কুণ্ডু। প্রদীপ বলেন, ‘‘গাড়ি চালানোর সময় কী কী কারণে বিপদ বা দুর্ঘটনা হতে পারে, তা বোঝাতেই চালকদের হাতে কলমে ট্রাফিকের নিয়মকানুন শেখানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এভাবে জেলার অন্য জায়গাতেই চালকদের নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’’