পর্ষদের দফতরের গেট আটকে বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে নামলেন দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের (ডিএসডিএ) অস্থায়ী কর্মীরা। সোমবার তাঁরা দিনভর কর্মবিরতি পালন করেন। সেই সঙ্গে ওল্ড দিঘায় পর্ষদের প্রশাসনিক ভবনে দুপুর আড়াইটা থেকে তাঁদের লাগাতার অবস্থান বিক্ষোভের ফলে প্রশাসনিক ভবনে ঢুকতে না পেরে ফিরে যান পর্ষদের প্রশাসক সুজন দত্ত। অস্থায়ী কর্মীদের অবস্থান-বিক্ষোভের জেরে এ দিন অফিসেই আটকে পড়েন সাতজন কর্মী। দিঘা উপকূল থানার পুলিশ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে অবস্থান তোলে। সেই সঙ্গে দফতরে আটকে থাকা কর্মীদের উদ্ধার করে।
ডিএসডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, পর্ষদের প্রায় ৮০ জন অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। এঁদের মধ্যে প্রায় ৫০ জন এদিন বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দেন। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, তাঁদের কেউ কুড়ি বছর, কেউ ২৫ বছর ধরে পর্ষদের কর্মী। কেউ বনরক্ষী কাজ করেন। কেউ বা অমরাবতী পার্ক-এর মালি কিংবা টিকিট কালেক্টর। কেউ আবার বিদ্যুৎ কর্মী, কেউ সাফাইয়ের কাজ করেন। কেউ পর্ষদের গেস্ট হাউসের পরিচালক। তাঁদের দাবি, গত ১২ ডিসেম্বর বেতন বৃদ্ধির দাবিতে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী , পুর ও নগর উন্নয়ন দফতরের ফিরহাদ হাকিম এবং কাঁথির শ্রম দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট লেবার কমিশনার এবং ডিএসডিএ-র প্রশাসক সুজন দত্তের কাছে স্মারকলিপি পাঠান। সোমবার কয়েক জন অস্থায়ী কর্মী সুজনবাবুর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে চান। কিন্তু সুজনবাবু তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে রাজি হননি বলে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ। এরপরেই ক্ষুব্ধ অস্থায়ী কর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
এদিন বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া অসীম কুমার কর বলেন, “১৯৯৭ সালে ৩০ টাকা দৈনিক মজুরিতে কাজে ঢুকেছিলাম। প্রায় ২২ বছর কাজ করছি। ২০১৪ সালের অগস্ট মাসে শেষবার ১৩ টাকা বেতন বেড়েছে। বর্তমান আমরা দৈনিক ২৪৫ টাকা মজুরিতে কাজ করছি। বর্তমান রাজ্য সরকার এসে নতুন বেতন কাঠামো তৈরি করেছে। আমরা সেই অনুযায়ী বেতন বৃদ্ধির দাবি জানাচ্ছি।’’ আন্দোলনকারী আরও এক অস্থায়ী কর্মী বলেন, “পুলিশ জানিয়েছে, আগামি ৪ ফেব্রুয়ারি সমুদ্র উৎসব শেষ হওয়ার পর, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাই আমরা বিক্ষোভ থেকে সরেছি। তবে সুবিচার না পেলে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে।’’
পর্ষদ সূত্রে জানানো হয়েছে, অস্থায়ী কর্মীরা আগে ঠিকাদারের মাধ্যমে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে, ‘না কাজ- না বেতন’ শর্তে কাজে ঢুকেছিলেন। সেই ঠিকাদার চলে গেলেও ওই অস্থায়ী কর্মীরা থেকে গিয়েছেন। তাঁরাই এদিন কর্মবিরতি পালন করায় দিঘার বিশ্ব বাংলা উদ্যান সহ নানা জায়গায় কাজ ব্যাহত হয়। পরে অন্য কর্মীদের দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়েছে। পর্ষদের এক আধিকারিক বলেন, “বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয় পর্ষদের বোর্ড। তাই এই দায়িত্ব কোনও ব্যক্তির উপর বর্তায় না। এটা কর্মীদের বোঝা উচিত।’’