রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ নন্দকুমারের বনভেড়া বাসস্টপের কাছে। নিজস্ব চিত্র
ঘূর্ণিঝড় আমপানে ট্রান্সফর্মার খারাপ এবং তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎহীন ছিল এলাকা। সপ্তাহ খানেক আগে নতুন ট্রান্সফর্মার বসিয়ে তার মেরামতি করা হয়েছিল। কিন্তু সেই ট্রান্সফর্মার ফের বিকল হয়ে ১৮ দিন ধরে বিদ্যুৎহীন রয়েছে নন্দকুমারের শীতলপুর গ্রাম। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার গ্রামের অদূরে বনভেড়া বাস স্টপে নন্দকুমার-দিঘা ১১৬ বি জাতীয় সড়ক অবরোধ করলেন গ্রামবাসীরা। রাস্তা বাঁশ ফেলে টায়ারে লাগানো হল আগুন।
অবরোধকারী গ্রামবাসীদের অভিযোগ, গত ২০ মে আমপান ঝড়ে গ্রামে বিদ্যুৎ লাইনের তার ছিঁড়ে যায় এবং ট্রান্সফর্মার বিকল হয়ে বিদ্যুৎহীন ছিল পুরো গ্রাম। পরে বিদ্যুৎদফতরের কর্মীরা একটি অল্প ক্ষমতার (২৫ কেভি) ট্রান্সফর্মার বসিয়ে বিদ্যুৎ লাইনের মেরামতি করেছিলেন। কিন্তু ১৮ দিন আগে সেই ট্রান্সফর্মারও বিকল হয়ে ফের গোটা গ্রাম বিদ্যুৎহীন হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।
গ্রামবাসীরা জানাচ্ছেন, বিদ্যুৎ না থাকায় পানীয় জল তোলার সাব-মার্সিবল অচল হয়ে পড়েছে। ফলে পানীয় জল আতে বাসিন্দাদের অন্য গ্রামে যেতে হচ্ছে। গ্রামের এক হাজার ৮০০ বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছেন। কারও বাড়িতে সন্ধ্যার পর আলো জ্বালানো যাচ্ছে না। গত দু’ একদিনের গরমে কাহিল অবস্থা সকলের।
স্থানীয় বাসিন্দা শেখ আকবর আলি বলেন, ‘‘গ্রামে প্রায় ১৮০০ বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছেন এছাড়া এলাকায় বেশ কয়েকটি মাছের ভেড়ি এবং সাব-মার্সিবল পাম্প রয়েছে। বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় ট্রান্সফর্মারের ক্ষমতা কম হওয়ায় সেটি ফের বিকল হয়ে গিয়েছে। গ্রামে নতুন করে উচ্চ ক্ষমতার ট্রান্সফর্মার বসানোর জন্য নন্দকুমার এবং জেলা বিদ্যুৎ দফতরে গিয়ে আর্জি জানিয়েছিলাম। কিন্তু তার পরেও সুরাহা হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই এ দিন রাস্তা অবরোধ করেছি।’’
এ দিনের বিক্ষোভে প্ল্যাকার্ড হাতে সামিল হয় গ্রামের কচিকাঁচারাও। সকাল ১০টায় অফিস টাইমে জাতীয় সড়ক অবরোধের জেরে আটকে পড়েন দিঘা, নন্দকুমারগামী বাস, গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালকেরা।
নন্দকুমার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে প্রায় আধ ঘণ্টা পরে অবরোধ ওঠে। ট্রান্সফর্মার সারানো প্রসঙ্গে জেলা বিদ্যুৎ দফতরের রিজিওনাল ম্যানেজার শ্যামল হাজরা বলেন, ‘‘আমপানের জেরে জেলায় প্রচুর সংখ্যক ট্রান্সফর্মার বিকল হয়ে গিয়েছে। উচ্চ-ক্ষমতার ট্রান্সফর্মারের মজুত ফুরিয়ে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। ওই গ্রামে দু’টি ট্রান্সফর্মার বসিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে। এক-দুদিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান করা হবে।’