চাউলখোলায় একটি মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে।
করোনা আবহে পুজোর আনন্দ ম্লান। বিষাদ মাখা মনেই লক্ষ্মীর আবাহনের আয়োজন করতে হচ্ছে এ বার গৃহস্থকে।
হলদিয়ার কিসমত শিব রামনগর এবং চাউলখোলা গ্রামের মানুষের কাছে বস্তুত লক্ষীপুজোই শারদোৎসব। অন্যান্য বছর দুর্গাপুজোর কয়েকটা দিন কোনওমতে কাটিয়ে দিয়ে কোজাগরীর উৎসবে মেতে উঠতেন এলাকার মানুষ। হই হই করে শুরু হয়ে যেত লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন। কিন্তু করোনা এ বার সেই আনন্দে ছায়া ফেলেছে। করোনা আর লকডাউনের প্রভাবে এখানেও বিষাদ। কিন্তু লক্ষ্মীকে আবাহন না করে কী থাকা যায়! তাই পুজোর বাজেট অনেক কম করেও সেই আয়োজন শুরু হয়েছে।
এলাকায় নামীদামি পুজোর সংখ্যা সাতের মতো। প্রতি বছর লক্ষ্মী পুজোয় দুর্গাপুজোর মতো জাঁকজমক হয়। এ বছর সবেতেই লাগাম পরানো হয়েছে। তা ছাড়া প্রশাসনের তরফেও বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। স্বভাবতই পুজোর আনন্দ অনেকটাই ম্লান। পুজো উপলক্ষে এ বার বসছে না কোনও মেলা। স্থানীয় ঋষি অরবিন্দ সংঘের আগের বছর পুজোর বাজেট ছিল প্রায় তিন লক্ষ টাকা। এবছর বাজেট কমে হয়েছে তার অর্ধেক। ক্লাবের তরফে সনাতন দলুই বলেন, ‘‘কোভিড আবহে সবারই আর্থিক দুর্দশা চলছে। তা ছাড়া সামাজিক দূরত্ব বিধিও মেনে চলার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হচ্ছে। তাই কোনওরকম আড়ম্বর ছাড়াই পুজো হচ্ছে। এ বার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য অগ্রিম দেওয়া হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’’ প্রশাসনের বিধিনিষেধ মেনে পুজোর আয়োজন করেছে অন্য পুজো কমিটিগুলিও। চাউলখোলা অগ্রণী সংঘ ক্লাবের তরফে গোকুল মাঝি বলেন, ‘‘যেহেতু করোনা সংক্রমণ আটকাতে হবে, তাই প্রশাসনের বিধিনিষেধ মেনে এবারের পুজো প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মন একদম ভাল নেই। শুধুমাত্র নিয়মরক্ষায় পুজো করা হচ্ছে।’’
স্থনীয় বাসিন্দা ও কলেজছাত্র রাজীব সরকার বলেন, ‘‘দুর্গাপুজায় আমাদের এখানে নতুন জামা হয় না। সবাই লক্ষীপুজোর জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। কিন্তু এবছর করোনা সবকিছুই বদলে দিয়েছে।ফলে উচ্ছ্বাসও নেই।’’