নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে আঁকা পট। নিজস্ব চিত্র
দিল্লির রাজপথে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে এ বারও দেখা যাবে না বাংলার ট্যাবলো। তা নিয়ে বিতর্কের আবহেই পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার পটশিল্পীদের আঁকা পটচিত্র পৌঁছে গেল দিল্লিতে, যা শোভা পাবে দিল্লির রাজপথে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে। ওই পটের বিষয়বস্তু, দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে বীর বিপ্লবীদের শৌর্য।
মোট ৩২ জন শিল্পী সাত দিন ধরে ৩০০ ফুট লম্বা এবং ছয় ফুট চওড়া পটচিত্রে ফুটিয়ে তুলেছেন দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের নানা সময় এবং চরিত্রের কথা। তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মবৃত্তান্ত, বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসি, স্বাধীনতা আন্দোলনে মাতঙ্গিনী হাজরার ভূমিকা-সহ নানা বিষয়বস্তু ফুটিয়ে তোলা হয়েছে পটচিত্রে। এই বিরাট কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দিয়েছেন পিংলার বিখ্যাত পটশিল্পী বাহাদুর চিত্রকর। এমন সুযোগ পেয়ে খুশি পিংলার নয়া এলাকার পটুয়ারা।
এ নিয়ে খুশির হাওয়া পটুয়া পাড়ায়। বাহাদুর বলে দিলেন, ‘‘আমাদের আঁকা পট প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে ঠাঁই পাচ্ছে। আমাদের কাছে এর চেয়ে আনন্দের আর কী আছে। আমরা ভীষণ খুশি।’’
পটুয়াদের আঁকা পটের অংশবিশেষ। নিজস্ব চিত্র।
মাস খানেক আগে ‘মন কি বাত’অনুষ্ঠানের ৭৩ তম পর্বে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গলায় উঠে এসেছিল পিংলার ওই পটশিল্পীদের কথা। গত বছর ২৩শে জানুয়ারি নেতাজি জন্মজয়ন্তীতে কলকাতা সফর করেন মোদী। সেই সময় জাতীয় গ্রন্থাগারে এক অনুষ্ঠানে নেতাজীর জন্মবৃত্তান্ত পটে ফুটিয়ে তুলে ছিলেন নয়ার পটশিল্পীরা। তা দেখে প্রধানমন্ত্রী পটশিল্পীদের সঙ্গে কথাও বলেন। এর পরই পটশিল্পীরা ডাক পেয়েছেন দিল্লির দরবারে।
গত বছর নেতাজির জন্মজয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সূত্র ধরে বাহাদুর বলছেন, ‘‘আমরা ৮ জন শিল্পী ১২০ ফুটের সেই পট এঁকেছিলাম। সেই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এসেছিলেন। পট দেখে উনি খুশি হয়েছিলেন। আমাদের সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। সেই সূত্র ধরেই এ বার সুযোগ পেলাম।’’
বাহাদুরের ভাষায়, ‘‘যখন খবরের কাগজ ছিল না তখন সামাজিক মাধ্যমের কাজ করেছে এই পটচিত্র।’’ বাহাদুর ছাড়াও এই কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন মনোরঞ্জন চিত্রকর, চাঁদনি চিত্রকর, মহিউদ্দিন চিত্রকর, কুরবান চিত্রকর, সাবিনা চিত্রকর, মলয় চিত্রকর এবং সমীর চিত্রকর। তাঁদের আঁকা পট শোভা পাবে দিল্লির রাজপথে।