ফাইল চিত্র।
এলাকায় একটি মিছিলে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর মাহাতোর। তার আগে এদিন সকালেই এলাকায় দেখা গিয়েছিল ছত্রধরের নামে পোস্টার। পিচবোর্ডের পোস্টারে লাল কালিতে লেখা ছিল, ‘সন্ত্রাসবাদী, মাওবাদী, খুনি ছত্রধর মাহাতো দূর হটো, রাতের অন্ধকারে মা-বোনেদের ধর্ষণ ও অত্যাচারকারী মাও নেতা ছত্রধর দূর হটো, তৃণমূল নেতা গো ব্যাক’। এরপর মিছিলে যাওয়ার যাবতীয় প্রস্তুতি সারা থাকলেও, শেষ মুহূর্তে আর মিছিলে অংশ নেননি ছত্রধর। বুধবার ঝাড়গ্রাম জেলার বেলিয়াবেড়া ব্লকের পেটবিন্ধি গ্রামের ঘটনা।
এ দিনই বেলিয়াবেড়া ব্লক তৃণমূলের উদ্যোগে পেটবিন্ধি পঞ্চায়েত কার্যালয় লাগোয়া এলাকা থেকে ডাংরিয়া পর্যন্ত তিন কিলোমিটার একটি মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। ওই মিছিলে ছত্রধরের যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পোস্টার কাণ্ডের পর শেষ মুহূর্তে তিনি আর অংশ নেননি। সূত্রের খবর, এলাকায় প্ল্যাকার্ড পোস্টার পড়ায় সেখানে যাওয়ার ঝুঁকি নেননি জনসাধারণের কমিটির প্রাক্তন নেতা। যদিও এ দিন ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু, দলের বেলিয়াবেড়া ব্লক সভাপতি টিঙ্কু পালের নেতৃত্বে মিছিলটি হয়। টিঙ্কুর অভিযোগ, ‘‘বিজেপির পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে, তাই বিজেপি এ সব করছে।’’ আর ছত্রধর বলেন, ‘‘নেতাই দিবসের অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ততার জন্য ওই কর্মসূচিতে যেতে পারিনি। সিপিএম ও বিজেপির লোকজনই আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে।’’
গত ২১ ডিসেম্বর ঝাড়গ্রাম ব্লকের পাটাশিমূল গ্রামে বঙ্গধ্বনি যাত্রায় গিয়ে একাংশ গ্রামবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন ছত্রধর। সেখানেও ‘খুনি ছত্রধর দূর হটো’ লেখা প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন নিয়ে ছত্রধরের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন স্থানীয়রা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে সেখানে কর্মসূচি করেছিলেন ছত্রধর। তবে এ দিন ছত্রধর আর ঝুঁকি নেননি। বেলিয়াবেড়া ব্লক তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকট। একদিকে রয়েছেন ব্লক সভাপতি টিঙ্কু পাল। অন্য দিকে ব্লকের সহ-সভাপতি কালীপদ সুর। এ দিন দলীয় মিছিলে কালীপদকে দেখা যায়নি। তৃণমূলের একাংশ আবার ছত্রধরকে নিয়েও দলের অন্দরে আপত্তি তুলেছেন। কালীপদ বলেন, ‘‘শরীর ভাল নেই, তাই মিছিলে যেতে পারিনি। কোথায় কী পোস্টার পড়েছে জানা নেই। বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী বলেন, ‘‘ছত্রধরকে নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই অসন্তোষ রয়েছে। এ সব তারই পরিণতি। আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ করছে তৃণমূল।’’