রাজনীতির রঙে আগাম হোলি রেলশহরে

দু’দিন ধরে আকাশ মেঘলা ছিল। সঙ্গে দফায় দফায় বৃষ্টি। শনিবার সকাল থেকে আবার রোদ-মেঘের খেলা চলছে। এরই মধ্যে দোল উৎসবের প্রস্তুতিও চলেছে জোরকদমে। পিচকারি, রংবেরঙের আবির, টুপি, মুখোশের পসরা বার্তা দিচ্ছে বসন্ত এসে গিয়েছে!

Advertisement

দেবমাল্য বাগচী

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০১৭ ০১:০২
Share:

আগেই: খড়্গপুরে বিজেপি কর্মীদের আবির খেলা। নিজস্ব চিত্র

দু’দিন ধরে আকাশ মেঘলা ছিল। সঙ্গে দফায় দফায় বৃষ্টি। শনিবার সকাল থেকে আবার রোদ-মেঘের খেলা চলছে। এরই মধ্যে দোল উৎসবের প্রস্তুতিও চলেছে জোরকদমে। পিচকারি, রংবেরঙের আবির, টুপি, মুখোশের পসরা বার্তা দিচ্ছে বসন্ত এসে গিয়েছে!

Advertisement

আজ, রবিবার রাজ্য জুড়ে দোল উৎসবে মাতবে মানুষ। তবে মিশ্র ভাষাভাষির শহর খড়্গপুরে দোলের থেকেও হোলির মেজাজ চড়া। দোলের পরের দিন, পথে-ঘাটে চলে রং খেলা। এ বার অবশ্য আগাম হোলি শুরু হয়ে গিয়েছে রেলশহরে। উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যে বিজেপি-র বিপুল জয়ের উৎসবে শনিবার থেকেই রং-আবিরে মাখামাখি গেরুয়া শিবির। এই শহরের বিধায়ক খোদ বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। খড়্গপুরের রাস্তায় তাই এ দিন গেরুয়া আবির হাতে দেখা গিয়েছে বিজেপির নেতা-কর্মীদের। পিছিয়ে নেই তৃণমূলও। শনিবার শহরের বিভিন্ন এলাকায় তাঁরাও বসন্ত উৎসবের আয়োজন করে সবুজ আবিরে ছড়িয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে নিজেদের দলীয় শক্তির কথা।

একসময়ে খড়্গপুরে দোল ও হোলি ঘিরে অল্পবয়সীদের উন্মাদনা দেখা দিত। রং খেলা নিয়ে মালঞ্চ, সুভাষপল্লি, ভবানীপুর, ঝাপেটাপুর, ইন্দা, নিমপুরা এলাকায় বচসা থেকে মারামারি, খুন পর্যন্ত দেখেছেন শহরবাসী। তবে গত এক দশকে সেই প্রবণতা অনেকটাই কেটেছে। রং খেলার ধুমও কমেছে। তবে উৎসবের সুর রয়েছে নিখাদ। সুভাষপল্লির বাসিন্দা ব্যবসায়ী ভোলা পাল বলছিলেন, “আমাদের শহরে তো দু’দিনের উৎসব। তাই দু’দিন দোকান বন্ধ রেখেছি। আমিও রং খেলব।”

Advertisement

এ বছরও শান্তিতেই দোল ও হোলি মিটবে বলে আশা শহরবাসীর। মালঞ্চর বাসিন্দা কলেজ ছাত্রী বিশাখা পাল বলেন, “রাসায়নিক রং কিছুটা এড়িয়ে চলি। তবে শুভেচ্ছা বিনিময় ও একটু আবির খেলতে পছন্দ করি।”

রঙের উৎসবে মিশে যাচ্ছে রাজনীতিও। হোলির আগে দেশের চার রাজ্যে বিজেপির জয় চাঙ্গা করেছে গেরুয়া শিবিরকে। দলের যুব মোর্চার শহর নেতা অভিষেক অগ্রবালের স্বীকারোক্তি, “আমাদের হোলি শুরু হয়ে গিয়েছে। এ বার তিনদিন ধরে হোলি খেলব।” শহরের বাসিন্দা বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি প্রেমচাঁদ ঝাঁ-ও বলেন, “উত্তরপ্রদেশে জয়ের পর থেকেই হোলি শুরু হয়ে গিয়েছে। সোমবার উৎসবে বিধায়ক দিলীপ ঘোষও থাকবেন। রাস্তায় নেমে মানুষকে শুভেচ্ছা জানাবেন।”

গেরুয়া শিবিরকে টেক্কা দিতে কৌশল্যা, ইন্দা, আয়মায় শনিবার বসন্ত উৎসব পালন করেছে তৃণমূল। দলের শহর সভাপতি প্রদীপ সরকার বলেন, “সাম্প্রদায়িক দল বিজেপি উত্তরপ্রদেশের জয়ের পরে জোর করে শহরবাসীকে যতই গেরুয়া রং লাগাক শহরের মানুষ আমাদের সঙ্গেই থাকবেন। বসন্ত উৎসবে মানুষের উপস্থিতি সেটাই প্রমাণ করছে।”

রঙের চাহিদায় অবশ্য টেক্কা দিচ্ছে গেরুয়াই। বোগদায় রঙের পসরা সাজিয়ে বসা সন্তোষকুমার হালওয়াসিয়া বলেন, “গত তিনদিন ভাল বিক্রি হয়নি। তবে আকাশে রোদ ওঠার পরে সব রং বিক্রি হচ্ছে। এ দিন থেকে গেরুয়া রঙের চাহিদা বেড়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement