—নিজস্ব চিত্র।
হুবহু তেল ট্যাঙ্কার। কিন্তু ভিতরে উঁকি দিতেই চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগর থানার পুলিশের তৎপরতায় রুখে দেওয়া গেল গরু পাচার! পড়শি রাজ্য ওড়িশায় নম্বর প্লেট লাগানো তেল ট্যাঙ্কারটিকে ইতিমধ্যেই আটক করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে গরুগুলিকেও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যে গরুপাচারকারী ট্রাকটির চালককে গ্রেফতারের পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জেলা পুলিশ জানিয়েছে। শুক্রবার একই ভাবে এসি বাসে করে গরু পাচার করতে গিয়ে পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানার পুলিশের হাতে একঝাঁক গরু ধরা পড়েছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার একটি তেল ট্যাঙ্কার দিঘা-নন্দকুমার ১১৬বি জাতীয় সড়কের হেড়িয়া স্টপেজ থেকে ইটাবেড়িয়ামুখি রাজ্য সড়ক ধরে যাচ্ছিল। সেই সময় গাড়িটির গতিবিধি দেখে পুলিশের সন্দেহ হয়। গাড়িটিকে থামতে বলতেই চালক দ্রুত গতিতে গাড়িটি নিয়ে চম্পট দেওয়ার চেষ্টা করে। ভূপতিনগর থানার পুলিশ বেশ খানিকটা সময় গাড়িটির পিছু ধাওয়া করে। অবশেষে সেটিকে ইটাবেড়িয়া বাজারের কিছু দূরে থামিয়ে দেওয়া হয়। এর পর গাড়ির উপরে উঠে ভিতরে উঁকি দিতেই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় সকলের। দেখা যায় ট্যাঙ্কারের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বেশ কয়েকটি গরু।
পুলিশ সূত্রে খবর, তেল ট্যাঙ্কারটির পিছনে অত্যন্ত নিপুণ ভাবে পাত কেটে দরজা বানানো হয়েছে। সেই দরজা বন্ধ করে দিলে ঘুণাক্ষরেও বোঝা যায় না কিছুই! এরই পাশাপাশি ট্যাঙ্কারের ভিতরে বিশেষ কায়দায় তৈরি করা হয়েছে প্ল্যাটফর্ম। এ ছাড়াও গরুগুলির শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখার জন্য ট্যাঙ্কারের মাথায় ঢাকনাগুলির পরিবর্তে তারের মোটা জাল লাগানো রয়েছে। যা বাইরে থেকে দেখে বোঝার কোনও উপায় ছিল না। তবে ট্যাঙ্কারের ভিতরে উচ্চতা অত্যন্ত কম থাকায় গরুগুলির দাঁড়ানোর কোনও উপায় ছিল না। এর ফলে গাদাগাদি করেই গরুগুলিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য জানান, ‘‘ভূপতিনগর থানার পুলিশের তৎপরতায় অভিনব কায়দায় গরুপাচার রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।” তবে পাচারকারীরা যে ভাবে তেল ট্যাঙ্কার, ভলভো বাসে করে নতুন নতুন পন্থায় গরু পাচার শুরু করেছে, তা যথেষ্ট চিন্তার কারণ বলেই পুলিশের মত। ভগবানপুরের বিজেপি বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি বলেন, ‘‘পুলিশের তৎপরতায় গরুপাচার রুখে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তবে যারা এই ধরণের পাচারের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে এই ধরণের অপরাধ রোখা যাবে না।’’