নিজস্ব চিত্র
রবিবার থেকে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত চিকিৎসা,খাদ্যদ্রব্য-সহ জরুরি পরিষেবা ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। পরিবহণ ও সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাজার, দোকানপাট খোলার ক্ষেত্রে সময় বেঁধে নিয়ন্ত্রণ বিধি চালু করা হয়েছে।
নিয়ম কার্যকর হওয়ার পরে রবিবার সকাল ৬টা থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক শহর সহ রাধামণি বাজার, নন্দকুমার, ব্যবত্তারহাট, চণ্ডীপুর, মেচেদা, কোলাঘাট, পাঁশকুড়া স্টেশন বাজার, হলদিয়া, কাঁথি সহ বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের টহলদারি ও সচেতনতা অভিযান চালানো হয়। বাজারগুলিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী কেনার জন্য ভিড় জমলেও সকাল ১০ টার পরে ভিড় কমে যায় বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তমলুক শহরের বড়বাজারে এদিন সকাল ৭ টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত ভিড় হলেও পরে লোকজন কমে যায় বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বড়বাজারের ওষুধ দোকানদার বিকাশ প্রামাণিক বলেন, ‘‘সাধারণত রবিবার সকালে প্রচুর মানুষের ভিড় হয়। তবে এদিন বাজারে সকালে অল্প সময়ের জন্য জিনিসপত্র কিনতে ভিড় হলেও সকাল ৯টা থেকেই লোকজনের সংখ্যা অনেক কমে যায়। পুলিশের নজরদারিও ছিল কড়া। মানুষের ভাল সাড়া মিলেছে।’’
এদিন মেচেদা পুরাতন বাজার ও রেললাইন সংলগ্ন আনাজ বাজারে সকালে লোকজনের বেশ ভিড় জমেছিল। তবে ঘড়িতে ১০টা বাজতেই দোকানপাট বন্ধ করে দেয় পুলিশ। তমলুকের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাসের নেতৃত্বের তমলুক শহরের বড়বাজার, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের কাঁকটিয়া বাজার, তমলুক ব্লকের রাধামনি বাজারে অভিযান চালায় পুলিশ বাহিনী। নন্দকুমার থানার পুলিশ নন্দকুমার বাজার ও ব্যবত্তারহাট বাজারে, কোলাঘাট থানার পুলিশ মেচেদা ও কোলাঘাট বাজারে অভিযান ও মাইক প্রচার করে সচেতনতা অভিযান চালায়। হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য ও জাতীয় সড়কে পুলিশ টহলদারি চালায়।
এদিন বিভিন্ন বাজারে বা সড়কে অভিযানের সময় কাউকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। তমলুকের এসডিপিও অতীশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘সরকারি নতুন নিয়ম কার্যকর হওয়ার পরে প্রথম দিন বিভিন্ন বাজারে ও সড়কে অভিযান চালানোর পাশাপাশি মানুষকে সচেতন ও সতর্ক করা হয়েছে। তবে এদিন কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। তবে আগামীকাল থেকে নিয়মভঙ্গকারীদের গ্রেফতার করা হবে।’’
কাঁথিতেও প্রথম দিনেই টের পাওয়া যায় পুলিশি কড়াকড়ি। কাঁথি থেকে দিঘা সর্বত্রই ছিল কড়া নজরদারি। লক্ষ্য, করোনা সংক্রমণের শৃঙ্খল ভেঙে দেওয়া। এ দিন সকাল থেকেই কাঁথি শহর সহ আশেপাশের এলাকায় কার্যত লকডাউন বিধি কার্যকর করতে মাঠে নেমে পড়েছিল প্রশাসন। খড়গপুর বাইপাস, দিঘা বাইপাস, সহ গুরুত্বপূর্ণ একাধিক জায়গায় নাকা তল্লাশি চালায় পুলিশ। মানুষকে সচেতন করতে মাঠে নামেন রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি। কাঁথির মহকুমাশাসক আদিত্য বিক্রম মোহন হিরানির সাথে শহরজুড়ে সচেতনতা মূলক প্রচার চালান অখিল। বেলা গড়িয়ে বিকেলেও জনমানব শূন্য দেখা গিয়েছে গোটা শহর। সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের রোজকার ছবিও এদিন একেবারেই উল্টো। একই ছবি দেখা গিয়েছে সৈকত শহর দিঘা ও মন্দারমণিতে। সেখানে সমস্ত হোটেল, লজ এবং অন্যান্য দোকানপাট পুরোপুরি বন্ধ ছিল।
পটাশপুরে দেহাটি, এগরা, ষড়রং এলাকায় নাকা চেকিং করে পুলিশ। প্রতাপদিঘি বাজারে জরুরি কাজ ছাড়া বের হওয়া বাইক আরোহীদের আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন পটাশপুর-২ এর বিডিও শঙ্কু বিশ্বাস। একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে ভগবানপুরে কার্যত লকডাউনের চেনা ছবি দেখা গেল না। সকাল থেকে ভগবানপুরে একাধিক আনাজ বাজারে মাস্ক ছাড়াই মানুষকে ভিড় করে কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়।