দিঘার ঝাউবনে পিকনিক পার্টির গাড়ির সারি। নিজস্ব চিত্র
বেলা যত গড়িয়েছে, ভিড় ততই বেড়েছে। কেউ স্পিড বোটে, কেউ টিউবে ভেসে সমুদ্রে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন। অনেকে আবার ঝাউবনে পিকনিকে মেতেছেন। বড়দিনে দিঘায় সৈকতের ধারে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। তবে প্রচুর পর্যটকের ভিড় হলেও তার ফল পেল না হোটেলগুলি। প্রায় সমস্ত হোটেল এবং লজেই উৎসবের মরসুমের শুরুতে ফাঁকা থাকল ঘর। বড়দিনে অন্যরকম ছবি দেখলেন হোটেল মালিকরা।
এদিন পিকনিকের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে বেগ পেতে হয় পুলিশকে। দিঘা সহ গোটা উপকূল এলাকার সমস্ত পর্যটন কেন্দ্রে প্রচুর পরিমাণ পুলিশ, সিভিল ডিফেন্স কর্মী, নুলিয়া, সাদা পোশাকের পুলিশের পাশাপাশি বিশেষ উইনার্স টিম নজরদারি চালায়। কাঁথি র এসডিপিও সোমনাথ সাহা বলেন, ‘‘ভিড় সামলাতে সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।’’
করোনা, লকডাউন আর ইয়াসের ধাক্কা কাটিয়ে নতুন করে সেজে উঠেছে সৈকত শহর। তারপর প্রথম বড়দিন। স্কুলগুলিতে পরীক্ষায় ইতি পড়েছে। ইংরেজি নববর্ষ পর্যন্ত লম্বা ছুটিতে ব্যাপক ভিড়ের আশা ছিল। সেইমত প্রস্তুতি নিয়েছিল সব পক্ষ। রবিবার সকালে ওল্ড থেকে নিউ দিঘা, মন্দারমণি , তাজপুর, শঙ্করপুর—সব জায়গাতেই তিল ধারণের জায়গা ছিল না। সৈকতের ধারে পিকনিকের আসর বসেছিল। সকালের দিকে সমুদ্র উত্তাল ছিল। জোয়ার থাকায় দীর্ঘ সময় ধরে পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে দেয়নি প্রশাসন। এতে খানিকটা হতাশ হন পর্যটকরা। দুপুরে ভাটা শুরু হতেই কাতারে কাতারে মানুষ সমুদ্র স্নানে নেমে পড়েন। অনেকেই পিকনিক শেষ করার পর বিজ্ঞান কেন্দ্র, অমরাবতী পার্ক, ঢেউ সাগর ঘুরে দেখে রওনা দেন বাড়ির উদ্দেশ্যে। নদিয়া থেকে ৪৫ জনের এক পর্যটক দল এসেছিল। দলেরই একজন বললেন, ‘‘মাঝেমধ্যেই আমরা দিঘায় বেড়াতে আসি। এই সময় হোটেলের ঘরভাড়া চড়া হবে বলে আশঙ্কা করে আমরা থাকার সিদ্ধান্ত নিইনি। পিকনিক করে রাতেই ফিরে যাব ঠিক করেছি।’’ মন্দারমণি এবং তাজপুরে অবশ্য অধিকাংশ হোটেলে পর্যটক ছিলেন বলে দাবি সেখানকার ব্যবসায়ীদের।
দিঘা হোটেল মালিক সংগঠনের এক কর্মকর্তা গিরিশচন্দ্র রাউত বলেন, ‘‘সব হোটেলে কিছু কিছু ঘর ফাঁকা। ভিড়ের যে আশা করা হয়েছিল তা হয়নি।’’ দিঘা- শঙ্করপুর হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘বড়দিন থেকে নতুন বছরের শুরু পর্যন্ত লম্বা ছুটি রয়েছে। আগামী সপ্তাহে স্বাভাবিক ভিড় হবে বলে আমরা আশাবাদী।’’