প্রতীকী চিত্র
দু’দিন আগেই করোনায় মৃত্যু হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং থানার এক সাব-ইন্সপেক্টরের। এ বার মৃত্যু হল করোনা আক্রান্ত ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ লাইনের অ্যাসিস্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর মনোজকুমার মণ্ডলের (৪৮)।লালগড়ের নেতাই গ্রামের বাসিন্দা মনোজ স্ত্রী, দুই মেয়ে ও বৃদ্ধা মাকে নিয়ে ঝাড়গ্রাম শহরে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। কিছুদিন আগে মানিকপাড়ায় আটদিন ডিউটি করে এসে সর্দি-জ্বর হয় তাঁর। মৃতের দাদা বলেন, ‘‘গত সোমবার ঝাড়গ্রাম সুপার স্পেশালিটিতে গিয়ে ভাই করোনা পরীক্ষার নমুনা দিয়ে এসেছিল। স্বাস্থ্য দফতর থেকে বাড়িতে থাকতে বলেছিল। কিন্তু রিপোর্ট জানায়নি।’’ বুধবার সন্ধ্যায় বাড়িতে প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তাঁর। মনোজের ডায়াবেটিসও ছিল। টোটোতে করে তাঁকে সুপার স্পেশালিটির জরুরি বিভাগে নিয়ে যান স্ত্রী ও বড় মেয়ে। মনোজকে পাঠানো হয় আইসোলেশন ওয়ার্ডে। পরিজনেরা জানান, সেখানে অক্সিজেন সিলিন্ডার খালি ছিল। পরে নতুন সিলিন্ডার এনে অক্সিজেন দেওয়ার সময়ে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পরে করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ হয়। রাতেই দেহ জীবাণুনাশক দিয়ে জিপার প্যাক করে পুরসভাকে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পুরপ্রশাসক সুবর্ণ রায়ের উপস্থিতিতে গভীর রাতে নহড়খাল শ্মশানে হয় সৎকার।
মৃতের বৃদ্ধা মা, স্ত্রী ও দুই মেয়ে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিশ্বকর্মা পুজো থাকায় তাঁদের করোনা পরীক্ষা হয়নি। এই ঘটনায় ফের জঙ্গলমহলের এই জেলায় স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। করোনা নিয়ন্ত্রণের নানা কাজে পুলিশকে ব্যবহার করা হচ্ছে। অথচ সে ভাবে করোনা পরীক্ষা হচ্ছে না। করোনার তথ্যগোপনের অভিযোগও রয়েছে। জেলাশাসক আয়েষা রানি ও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা আগাগোড়া করোনা নিয়ে চুপ। চিকিৎসক মহলের একাংশ বলছেন, জেলাকে করোনাহীন দেখাতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনছে প্রশাসন। এক সূত্রে খবর, জেলার ৫০ জন পুলিশ কর্মী সংক্রমিত হয়ে হোম আইসোলেশনে আছেন। এ দিন জেলা করোনা হাসপাতালে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। গোপীবল্লভপুরের হুমটিয়া গ্রামের বাসিন্দা ওই বৃদ্ধ দু’দিন ধরে চিকিৎসাধীন ছিলেন।