প্রতীকী ছবি।
কথায় বলে স্বভাব যায় না ম’লে! ইংরাজিতে এমএ পাশ চোর তাই বছর ঘুরতে না-ঘুরতেই ফের শ্রীঘরে।
গত বছর হাওড়ার সাঁকরাইলে ফ্ল্যাট থেকে কয়েক লক্ষ টাকার গয়না চুরির অভিযোগে গ্রেফতারের পরেও শোধরায়নি সৌমাল্য চৌধুরী। এ বার পুলিশ তাকে ধরল ঘাটাল শহরের আবাসনে দিনেদুপুরে চুরির ঘটনায়।
আদতে আসানসোলের বাসিন্দা সৌমাল্যর নেশা ও পেশা দুই-ই হল চুরি। তার বাবা সরকারি আধিকারিক ছিলেন। মা-ও চাকরি করতেন। মায়ের গয়নাও চুরি করে বিক্রি করে দিয়েছিল এই যুবক। ছেলের কুকীর্তির সইতে না-পেরে আত্মঘাতী হন মা। সৌমাল্য অবশ্য শোধরায়নি। একের পর এক চুরি চালিয়ে গিয়েছে এই ‘গুণধর’ ছেলে। গত কয়েক বছরে আসানসোল, হাওড়া ও হুগলি জেলায় প্রায় ২০টি চুরির ঘটনায় সে অভিযুক্ত। শেষে গত বছর জুন মাসে হাওড়ার সাঁকরাইল থানার পুলিশ এই ‘উচ্চশিক্ষিত’ চোরকে গ্রেফতার করে। জামিনে মুক্তি পেয়ে ফের চুরির রাস্তা ধরে সৌমাল্য।
ঘাটালের আবাসনে চুরির ঘটনায় রবিবার রাতে পাঁশকুড়া থানার মেচোগ্রাম থেকে সৌমাল্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার তাকে ঘাটাল আদালতে তোলা হলে ৭ দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়। ঘাটালের এসডিপিও অগ্নীশ্বর চৌধুরী বলেন, “ধৃতকে জেরা করে চক্রের অন্যদের নাম এবং চুরি যাওয়া গয়নার হদিস জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
দিন কয়েক আগে ঘাটাল শহরের কোন্নগরে ওই আবাসনে দুপুরবেলায় তালা কেটে চুরি হয়। বিদ্যুৎ দফতরের এক মহিলা আধিকারিকের লক্ষাধিক টাকার গয়না নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। তার আগে আবাসনে বিদ্যুৎ দফতরের আরও এক আধিকারিকের বাড়ির তালা ভেঙে চুরির চেষ্টা চালায় তারা। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে পুলিশ দেখে, স্কুটিতে চেপে এসেছিল দুষ্কৃতীরা। তার সূত্র ধরেই সৌমাল্যর নাগাল মেলে। রবিবার পাঁশকুড়া পুলিশের সাহায্যে ঘাটাল থানার ওসি দেবাংশু ভৌমিকের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল তাকে পাকড়াও করে।
পুলিশি সূত্রের খবর, বছর তিরিশের ওই যুবকের কথাবার্তা পরিশীলিত। জেরায় সৌমাল্য দাবি করেছে, বছর পাঁচেক আগে সে রেলে চাকরি পায়। হাওড়ার ঘটনায় গ্রেফতারের পরে সাসপেন্ড হতে হয়েছে। কর্মসূত্রে কয়েক বছর খড়্গপুরে থাকত। পাঁশকুড়াতেও ডেরা আছে। ঘাটালের ওসি দেবাংশু ভৌমিক বলেন, “ওই যুবক সত্যি রেলে চাকরি করে কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে।”