ছাত্রীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক পালিয়েছিলেন। প্রতীকী চিত্র।
দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রীকে যৌন হেনস্থার অভিযোগে অবশেষে ওড়িশা থেকে গ্রেফতার হলেন পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর থানার একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক।
পুলিশ প্রশাসনের হাত থেকে বাঁচতে পালিয়েছিলেন ভিন্রাজ্যে। তবে শেষরক্ষা হল না। পুলিশের পাতা জালেই গ্রেফতার হল যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত প্রধানশিক্ষক। পুলিশ সূত্রে খবর, স্কুলেরই এক দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী কিছু সমস্যা নিয়ে প্রধানশিক্ষকের কাছে গিয়েছিল। সেই থেকে ওই ছাত্রীর ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করতেন প্রধানশিক্ষক। শুধু তা-ই নয়, ছাত্রীকে পরে দিঘার হোটেলে নিয়ে গিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য প্রস্তাব দেন।
নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, শারীরিক সম্পর্কের বিনিময়ে ছাত্রীকে নতুন জামাকাপড় এবং হাতখরচ দেওয়ার প্রস্তাব দেন প্রধানশিক্ষক। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীর সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন তিনি। আবার বাড়িতে এ কথা জানালে পরীক্ষায় ছাত্রীকে অকৃতকার্য করে দেবেন বলে হুমকি দেওয়া হয়।
তার পরেও ওই ছাত্রী বাড়িতে গিয়ে সব কথা খুলে বলে। ওই প্রধানশিক্ষকের শাস্তির দাবিতে চলতি বছরের ২৬ অগস্ট বিকেলে এগরা-বাজকুল রাজ্য সড়কের ভগবানপুর বাজার সংলগ্ন রাস্তার বসে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ভগবানপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ছুটে যায় পুলিশ। স্কুলে আটকে রাখা অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্ধার করে তারা। ওই সময়েই প্রধানশিক্ষক গোরাচাঁদ দাস সেখান থেকে চম্পট দেন। তবে পুলিশ অভিযুক্তের গ্রেফতারির আশ্বাস দেওয়ায় অবরোধ উঠে যায়।
এর পর দু’সপ্তাহ ধরে প্রধানশিক্ষকের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। অবশেষে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শুক্রবার গভীর রাতে ওড়িশার একটি হোটেল থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪, ৩৫৪(এ), ৫০৬ এবং পকসো আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। গ্রেফতারিতে খুশি অভিযোগকারিণীর পরিবার। তবে ওই প্রধান শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক সাজা চেয়েছেন তাঁরা। ভগবানপুর থানার ওসি নাড়ুগোপাল বিশ্বাস বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে কটকের একটি হোটেল থেকে অভিযুক্ত প্রধানশিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার ধৃতকে কাঁথি আদালতে পাঠানো হয়েছে।’’