প্রতীকী ছবি।
খবর ছিল বোমাবাজির ঘটনার অভিযুক্তেরা জমায়েত হয়েছে। সেই মতো অভিযান চালিয়েছিল পুলিশ। জলাজমিতে রীতিমতো পিছু ধাওয়া করে শেষে চার জনকে ধরল পুলিশ। উদ্ধার করা হল ৭৭টি বোমা। ধৃতেরা সকলেই বিজেপি কর্মী হিসাবে এলাকায় পরিচিত।
তৃণমূল এবং বিজেপির সংঘাতে প্রায় সাড়ে তিন বছর অশান্ত ময়নার বাকচা পঞ্চায়েত এলাকা। এলাকায় গোলমাল পাকানোর অভিযোগে গোঁড়ামহাল গ্রামের পশ্চিম বুথের বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য প্রসেনজিৎ ভৌমিককে কিছুদিন আগে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। আদালতে জামিন পেয়ে শুক্রবার সকালে তমলুক জেল থেকে প্রসেনজিৎ ছাড়া পায়। আর প্রসেনজিৎ গ্রামে ফেরার পরেই গোড়ামহল গ্রামের বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা বোমাবাজি করে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ আসে।
পুলিশ সূত্রের খবর, বোমাবাজির সঙ্গে জড়িতেরা প্রসেনজিতের বাড়ির কাছেই জমায়েত হয়ে রয়েছে বলে তাদের কাছে খবর আসে। এর পরেই দুপুরে ময়না থানার ওসি, সেকেন্ড অফিসারের নেতৃত্বে পুলিশ বাহিনী গোড়ামহল গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় হানা দেয়। পুলিশ আসার খবর পেয়ে ১৮-২০ জন মাঠের জলাজমি দিয়ে ছুটে পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ তাদের ধরতে ধাওয়া করে। এক কিলোমিটার ছুটে পুলিশ চারজনকে ধরে ফেলে। বাকিরা পালিয়ে যায়। তাদের কাছ থেকে ৭৭টি বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ। পিছু ধাওয়ার সময়ে আহত হয়েছেন ময়না থানার ওসি গোপাল পাঠক, সেকেন্ড অফিসার চন্দন মাইতি। দাবি, জমিতে ফেলে রাখা ধারাল কিছুতে তাঁরা আহত হয়েছেন।
ধৃতদের মধ্যে রয়েছে মহেন্দ্র বাড়ই, শুভাশিস গাঠিয়া, তাপস হাজরা ও সন্দীপ তালিকা। মহেন্দ্রর বাড়ি বাকচার গোবরাদন গ্রামে। তাপস বাকচা গ্রামের বাসিন্দা। শুভাশিস, সন্দীপের বাড়ি খিদিরপুর গ্রামে। এদের মধ্যে মহেন্দ্র বোমা বাঁধায় দক্ষ বলে জানিয়েছে পুলিশ। কয়েকদিন আগে মহেন্দ্রর ভাই ইন্দ্রজিৎকেও পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। ধৃতদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ২০১৮, ২০১৯ সালে বাকচা এলাকায় বিভিন্ন গোলমাল, পুলিশকে আক্রমণ, পুলিশের গাড়ি থেকে জিনিসপত্রের লুট- সহ একাধিক মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।
তৃণমূলের দাবি, বিজেপি এলাকায় উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে। তৃণমূলের ময়না ব্লক সভাপতি সুব্রত মালাকারের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি বোমা ও বন্দুক নিয়ে এলাকার মানুষকে সন্ত্রস্ত করে রাখতে চাইছে।’’ যদিও বিজেপি’র জেলা সহ-সভাপতি (তমলুক) আশিস মণ্ডলের দাবি, ‘‘গোড়ামহল গ্রামের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য প্রসেনজিৎ ভৌমিক আদালতের নির্দেশে জামিন পেয়ে বাড়িতে ফেরার পর আমাদের সমর্থকরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সে সময় পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে গেলে তাঁরা পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ আমাদের চারজন নিরীহ সমর্থককে গ্রেফতার করেছে। তৃণমূলই পুলিশের সাহায্যে এলাকাকে দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল বানাতে চাইছে।’’