নাটশালের নরসিংহ চক ঘিরে পর্যটনের পরিকল্পনা

হুগলি, হলদি, রূপনারায়ণ— এই তিন নদীর সঙ্গম স্থলকে ঘিরে ওই এলাকার প্রতি মানুষের আকর্ষণ বাড়ছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই এলাকার একটি ইতিহাসও রয়েছে। শ্রীলঙ্কার রাজা বিক্রম সিংহ এক সময় এলাকায় এসেছিলেন।

Advertisement

আরিফ ইকবাল খান

গেঁওখালি শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৩৬
Share:

নরসিংহ চকে ইংরেজের তৈরি সেচ বাংলো। নিজস্ব চিত্র

পর্যটনের সম্প্রারণে মহিষাদল, ময়না, দিঘা-সহ বিভিন্ন শহরগুলিতে আগেই জোর দেওয়া হয়েছে। এবার গেঁওখালির নাটশালের নরসিংহ চককে ঘিরে পর্যটনের নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় পঞ্চায়েতের উদ্যোগেই সেখানে শুরু হয়েছে পর্যটন শিল্পের বিকাশের স্বপ্ন দেখা।

Advertisement

হুগলি, হলদি, রূপনারায়ণ— এই তিন নদীর সঙ্গম স্থলকে ঘিরে ওই এলাকার প্রতি মানুষের আকর্ষণ বাড়ছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই এলাকার একটি ইতিহাসও রয়েছে। শ্রীলঙ্কার রাজা বিক্রম সিংহ এক সময় এলাকায় এসেছিলেন। তাম্রলিপ্ত বন্দরের ব্যবসা করতে আসা ওই রাজার ত্রিবেণী সঙ্গম পছন্দ হয়ে যায়। সেই সময় এই এলাকায় জঙ্গল ছিল। জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করে এই এলাকায় তিনি একটি নাট্যশালা তৈরি করেন। সেই থেকেই এলাকার নাম হয় নাটশাল।

এলাকায় শতাব্দী প্রাচীন রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম এবং মন্দির রয়েছে। মন্দিরের বিগ্রহ বেলুড় মঠের আদলে তৈরি। বহু পর্যটক ওই মন্দিরে আসেন। এলাকার বাসিন্দা শঙ্কর ধাড়া বলেন, ‘‘ছোট থেকে দেখেছি এখানের সৌন্দর্যের টানে বহু মানুষ আসতেন। মূলত, সূর্যাস্ত দেখতে ভিড় হয়।’’

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা তথা নাট্যকর্মী অলকেশ সামন্ত বলেন, ‘‘এখানের নাটশালের ইতিহাস রয়েছে। এখানেই রয়েছে ব্রিটিশ আমলের সেচ বাংলো। ওই সেচ বাংলোয় এসে থেকেছেন বিখ্যাত চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ও। এখনও বাংলোয় বহু মানুষ আসেন।’’

স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য শিবপ্রসাদ বেরা বলেন, ‘‘এলাকার সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে অনেকেই আসেন। সেই কথা মাথায় রেখেই আমরা কয়েকশো হেক্টর জমিতে বনসৃজন করেছিলাম। নদী তিরে বনসৃজন করায় সৌন্দর্য বেড়েছে। নদীর পাড়ে জঙ্গলের মধ্যে বসে অনেকেও পিকনিকও করেন। সে জন্য আমরা এই এলাকায় পানীয় জল-সহ অন্য ব্যবস্থাও করেছি।’’

নাটশাল এলাকায় প্রাচীন গেঁওখালি নদী ঘাট রয়েছে। সেখান থেকে লঞ্চে যাওয়ায় আর এক পর্যটন কেন্দ্র গাদিয়াড়া এবং নুরপুরে। লঞ্চে করে ভ্রমণেরও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে খবর। মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তিলক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মহিষাদল রাজবাড়িকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই পর্যটনের নানা পরিকল্পনা করা হয়েছে। গেঁওখালি সংলগ্ন নাটশালেও নানা পরিকল্পনা রয়েছে।’’ তবে নাটশালের নদী ভাঙনও যে তাদের চিন্তার কারণ হয়েছে, সে বিষয়েও জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement