সফর: মেদিনীপুরে বাংলাদেশের ট্রেন। ফাইল চিত্র
উৎসবের প্রস্তুতিতেও ছায়া ফেলেছে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ভয়। এ বার বাংলাদেশ থেকে আসা তীর্থযাত্রীদের ‘স্ক্রিনিং’ বা স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে মেদিনীপুরে। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে তার ব্যবস্থা করছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘বাংলাদেশ থেকে যাঁরা আসবেন, তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরাও বলছে, ‘‘স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
উরস উপলক্ষে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি মেদিনীপুরে এসে পৌঁছবে বাংলাদেশের বিশেষ ট্রেন। প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার বিকেলে মেদিনীপুর পুরসভার সভাকক্ষে এক বৈঠক হয়েছে। জেলাশাসকের নির্দেশে এই বৈঠক হয়। ছিলেন পুর-প্রশাসক তথা মেদিনীপুরের মহকুমাশাসক (সদর) দীননারায়ণ ঘোষ ও বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরা ছিলেন। বাংলাদেশ থেকে আসা তীর্থযাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিষয়টি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, মেদিনীপুর স্টেশন চত্বরেই এই স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ভিড় সামলাতে পুলিশ এবং রেলপুলিশের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। তীর্থযাত্রীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, কেউ অতি সম্প্রতি চিনে গিয়েছিলেন কি না। গিয়ে থাকলে সংশ্লিষ্ট তীর্থযাত্রীর বিশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে। জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, করোনা সংক্রমণের উপসর্গ হল জ্বর, সর্দি, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট। এই সব উপসর্গ কারও রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।
মেদিনীপুর শহরের জোড়া মসজিদে প্রতি বছরই সুফি সাধকের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে উরস উৎসব হয়। শুধু ওপার বাংলা নয়, রাজ্যের বিভিন্ন জেলা এবং ভিন্ রাজ্য থেকে মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন এখানে আসেন। জোড়া মসজিদের পাশে মেলা বসে। মেলায় জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলে আসেন। পুর-প্রশাসক দীননারায়ণ ঘোষ বলেন, ‘‘উরসে এসে কেউ যাতে সমস্যায় না পড়েন, সে জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
উৎসবে করোনার ভয়
আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি মেদিনীপুরে পৌঁছবে বাংলাদেশের ট্রেন
‘উরস স্পেশ্যাল’ এই ট্রেনে থাকার কথা ২,৩৩৩ জন তীর্থযাত্রীর
বাংলাদেশ থেকে আসা তীর্থযাত্রীদের ‘স্ক্রিনিং’ বা স্বাস্থ্য পরীক্ষা হবে
মেদিনীপুর স্টেশন চত্বরে ১০টি শিবিরে থাকবেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা
করোনার লক্ষণ এবং রোগের মোকাবিলায় সচেতনতা প্রচার হবে
বস্তুত, পশ্চিম মেদিনীপুরে ইতিমধ্যেই করোনার আতঙ্ক ছড়িয়েছে। জেলার দু’জনের সোয়াব পরীক্ষা হয়েছে। দু’জনই বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অবশ্য কারওরই সোয়াব পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসেনি। ওই দু’জন চিন থেকে ফিরেছিলেন। খড়্গপুর আইআইটির এক ছাত্রও আইসোলেশনে রয়েছেন। উপসর্গ না থাকলেও তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বলেন, ‘‘করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। আমরা সব দিকেই নজর রেখেছি।’’ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ঝুঁকি এড়াতেই বাংলাদেশ থেকে আসা তীর্থযাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মেলা চত্বরেও শিবির থাকবে। করোনার লক্ষণ এবং রোগের মোকাবিলায় কী ধরনের সতর্কতা মেনে চলতে হবে, সেই বিষয়ে সকলকে সচেতন করা হবে।’’