পড়ে রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেঁড়া ফ্লেক্স। শুক্রবার তমলুকে। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদলে জেলায় দলের বিভিন্ন পদাধিকারীও পরিবর্তন হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল যুব সভাপতির পদ থেকে ময়নার বিধায়ক সংগ্রাম দোলইকে সরিয়ে নিযুক্ত হয়েছেন পার্থসারথি মাইতি। যুব তৃণমূলের জেলা নতুন সভাপতি নিযুক্ত হওয়ার পরে তমলুক শহর সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সহ প্রচুর হোর্ডিং টাঙানো হয়েছে। কয়েকদিন আগে পার্থর নাম দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-সহ হোর্ডিং দেওয়া হয়েছিল হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়কে সোনাপেত্যা টোলপ্লাজার কাছে। কিন্তু শুক্রবার সকালে ওই সব হোর্ডিং ছিঁড়ে রাস্তায় পড়ে থাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। বিষয়টি জানার পর পুলিশ ও দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানিয়েছেন জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি।
কিছুদিন আগে তমলুক শহরে শুধু শুভেন্দু অধিকারী ছবি সহ একাধিক পোস্রায় লাগানো হয়েছিল। সেখানে দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কোনও ছবি না থাকা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছিল। সেই সব পোস্টার এদিনও দেখা গিয়েছে। অথচ সেই জেলা সদরেই এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-সহ হোর্ডিং ছিঁড়ে পড়ে থাকার ঘটনায় ফের রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। কারণ, যে টোলপ্লাজার কাছে এই ঘটনা ঘটেছে, সেই টোলপ্লাজায় তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা শুভেন্দু অনুগামী বলেই পরিচিত। যদিও এই বিষয়ে পার্থ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-সহ হোর্ডিং ছেঁড়ার একটা ঘটনা ঘটেছে। রাতের অন্ধকারে কারা এটা করেছে দেখিনি। আমি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। তবে টোলপ্লাজায় সিসিটিভি রয়েছে এবং সেখানে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের শ্রমিকরা থাকেন। ওঁদের কাছেও খোঁজ নিচ্ছি।’’ দলের কেউ এর পিছনে রয়েছে কিনা প্রশ্নের উত্তরে পার্থ বলেন, ‘‘সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সম্প্রতি তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদলে যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতির পদ থেকে ময়নার বিধায়ক সংগ্রাম দোলইকে সরানো, দলের পর্যবেক্ষক পদ তুলে দেওয়া নিয়ে জেলায় শুভেন্দু অনুগামী বলে পরিচিত দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ ক্ষুব্ধ। এই পরিস্থিতিতে জেলা সদর তমলুক শহর সহ বিভিন্ন এলাকায় যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সহ প্রচুর হোর্ডিং পড়তে শুরু করে। জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি পার্থসারথি মাইতির নামে দেওয়া হয়েছে ওই সব হোর্ডিং। এতদিন দলের পোস্টার, পতাকা ছেঁড়া নিয়ে বার বার বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত বিজেপিকে দায়ী করা হয়নি। আর সেখানেই প্রশ্ন উঠেছে দলের মধ্যে থেকে কেউ এমন কাজ করেছে কি না তা নিয়ে।
এলাকায় দলের নেত্রী ও যুব তৃণমূল সভাপতির হোর্ডিং ছেঁড়া নিয়ে শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক তৃণমূল আহ্বায়ক শরৎ মেট্যা বলেন, ‘‘টোলপ্লাজার কাছে এমন ঘটনা আমাদের নজরে এসেছে। এর নিন্দা করছি। ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে দলীয়ভাবে তদন্ত হচ্ছে।’’