ফাইল চিত্র।
‘দুয়ারে সরকারে’র শিবিরে বিপুল ভিড় কমাতে চাইছে পুর-প্রশাসনও। মেদিনীপুর শহরে এ বার স্থায়ী শিবির শুরু হল। শিবিরটি হচ্ছে মেদিনীপুর কলেজ চত্বরে। পুর-কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, মূলত ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’র জন্যই এই শিবির। এখান থেকে প্রকল্পের ফর্ম দেওয়া ও জমা নেওয়া হবে। যতদিন ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি চলবে, ততদিন এই শিবির চলবে।
শুক্রবার থেকে শিবির শুরু হয়েছে। শুরুর দিনে শিবির পরিদর্শনে এসেছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) কুহুক ভূষণ। এসেছিলেন বিধায়ক জুন মালিয়া, পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর তরফে সৌমেন খান, বিশ্বনাথ পাণ্ডব প্রমুখ। প্রথম দিন তেমন ভিড় হয়নি। পুর-কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, আগামী সোমবার থেকে এখানে ভিড় হবে। মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়া বলেন, ‘‘স্থায়ীভাবে একটা শিবির করা হল শহরে। সব প্রকল্পের ফর্মই দেওয়া হবে এখান থেকে। তবে অগ্রাধিকার লক্ষ্মীর ভান্ডারই।’’ সৌমেন বলছেন, ‘‘আশা করছি, স্থায়ী শিবিরটি চালুর ফলে শহরের মানুষ উপকৃত হবেন।’’ বিশ্বনাথের বক্তব্য, ‘‘শিবিরগুলিতে প্রচুর ভিড় হচ্ছে। তাই এ ভাবে স্থায়ী শিবির চালুর ভাবনা।’’ পুর কর্তৃপক্ষের আশা, অনেকে স্থায়ী শিবিরে এসে ফর্ম নেবেন, জমা দেবেন।
পুরসভা সূত্রে খবর, মেদিনীপুর শহরে এখনও পর্যন্ত ১২টি শিবির হয়েছে। এর মধ্যে ১১টি হয়েছে শিবির পিছু ২টি করে ওয়ার্ড নিয়ে। একটি শিবির হয়েছে ৩টি ওয়ার্ড নিয়ে। শহরে ২৫টি ওয়ার্ড। ১২টি শিবিরে আবেদন এসেছে প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার। অর্থাৎ শিবিরপিছু গড়ে আবেদন এসেছে প্রায় ৯,১০০টি। মোট আবেদনের প্রায় ৭০ হাজারই ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে’র।
শুধু মেদিনীপুর নয়, ভিড় এড়াতে জেলা জুড়েই ‘দুয়ারে সরকারে’র শিবিরের সংখ্যা আরও বাড়ানো হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। শুক্রবার ব্লকগুলিকে জেলা প্রশাসনের পরামর্শ, প্রয়োজন অনুযায়ী আরও অতিরিক্ত শিবির করতে হবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘ভিড় এড়াতে শিবিরের সংখ্যা আগেই বাড়ানো হয়েছিল। প্রতিটি ব্লকেই এখন অতিরিক্ত শিবির হচ্ছে। প্রয়োজনে আরও অতিরিক্ত শিবির করার কথা জানানো হয়েছে।’’ সবচেয়ে বেশি ভিড় হচ্ছে ‘লক্ষ্মীর ভান্ডারে। নতুন এই প্রকল্পের জন্য একই গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রয়োজনে ৪- ৫টি অতিরিক্ত শিবির করার কথা জানানো হয়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, নবান্নের কড়া নির্দেশ ছিল, শিবিরপিছু দেড় হাজারের বেশি জন সমাগম যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। পরে নতুন নির্দেশ এসেছে। জানানো হয়েছে, শিবিরপিছু পাঁচশোর বেশি জন সমাগম যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। ইতিমধ্যে জেলায় আবেদনপত্র জমা পড়েছে সবমিলিয়ে প্রায় ৯ লক্ষ। এরমধ্যে ৬০ শতাংশেরও বেশি আবেদনপত্র জমা পড়েছে শুধু ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্পের জন্যই।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, শুরুতে পশ্চিম মেদিনীপুরে দিনে গড়ে ৩৫- ৪০টি করে শিবির হচ্ছিল। পরবর্তী পরিস্থিতিতে দৈনিক শিবিরের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। দিনে গড়ে ৯০- ১০০টি করে শিবির হচ্ছে। এ বার তা বেড়ে দিনে গড়ে ১২০টি করে হতে পারে।