Khejuri

ফাঁকা চেয়ার ভরল শুভেন্দু মঞ্চে উঠতেই

গত ৩ এপ্রিল খেজুরির এই ঠাকুরনগরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সভা করেছিলেন। সোমবার তারই পাল্টা হিসাবে জনসভা ছিল বিরোধী দলনেতার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খেজুরি শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:৫৩
Share:

ঠাকুরনগরে সোমবার শুভেন্দুর সভায় জনসমাগম। নিজস্ব চিত্র

বিকেল দুটোর সময় জনসভার আয়োজন করেছিলেন কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। অথচ বিকেল তিনটে পর্যন্ত মাঠ প্রায় ফাঁকা ছিল। তবে সাড়ে তিনটে নাগাদ যখন শুভেন্দু অধিকারী মঞ্চে উঠলেন তখন প্রায় কানায় কানায় ভরে উঠেছে সভাস্থল।

Advertisement

গত ৩ এপ্রিল খেজুরির এই ঠাকুরনগরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সভা করেছিলেন। সোমবার তারই পাল্টা হিসাবে জনসভা ছিল বিরোধী দলনেতার। মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল থেকে ঠিক ৫০ মিটার দূরেই ছিল শুভেন্দুর সভা।

এ দিন সকাল থেকেই গোটা জেলা জুড়ে ছিল তীব্র গরম। গাছের পাতা নড়ার মতো বাতাসটুকুও বইছিল না। ফলে দুপুর গড়িয়ে সভা শুরু হওয়ার পরেও বহু আসন ফাঁকা ছিল। পরে অবশ্য সমস্ত চেয়ার ভরে যায়। মঞ্চে বক্তৃতা দিতে উঠে শুরুতেই সামনের শ্রোতাদের মনে করিয়ে দিয়ে নন্দীগ্রামের বিধায়ক তথা বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘এখানে আপনাদের কিছু দিতে পারিনি। খাওয়া দূরের কথা, জলের বোতলটুকুও দিতে পারিনি। ৬০ হাজার জলের পাউচ রাখা আছে। ৪০ পয়সা করে মূল্য।’’

Advertisement

এদিন মঞ্চে হাজির বিজেপি বিধায়ক এবং দলীয় নেতাদের জন্য এয়ারকুলারের বন্দোবস্ত করা হয়। যদিও বিরোধী দলনেতা তা বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে তিনি এও বলেন, ‘‘আপনিও কর্মী। আমিও কর্মী। নেতা একজন—নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদী।’’ জনসভায় যোগ দেওয়া দলের কর্মীদের উদ্দেশে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘আপনারাও ঘামছেন। আমিও ঘামছি। এগুলো সব বন্ধ রাখা আছে। এগুলো কিন্তু চলছে না। এটা পিসি- ভাইপোর পার্টি নয়।’’

মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা শুভেন্দুর সভায় জমায়েত বেশ ভালই হয়েছিল। তবে, মুখ্যমন্ত্রীর সভার তুলনায় তাঁর এই কর্মসূচি যে সফল সে কথা বোঝাতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘সেদিন ১৬ হাজার বর্গফুট জায়গায় লোক বসেছিল। আজ ২৫ হাজার বর্গফুট জায়গায় বসার ব্যবস্থা। সেদিন ব্যারিকেড ছিল। হেলিকপ্টার দেখার জন্য কিছু ভিড় ছিল। যারা ভোটার নয়, ৪ হাজার স্কুলপড়ুয়াকে সাইকেল দেওয়ার নাম করে জোর করে নিয়ে এসেছিল ওরা। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর প্রায় ৩ হাজার মহিলা এসেছিলেন। বিডিওরা বলেছিলেন অ্যাকাউন্টে পাঁচ হাজার টাকা করে ঢুকিয়ে দেব। আড়াই হাজার সিভিক সহ চার হাজার পুলিশ এনেছিলেন এখানকার পুলিশ সুপার। পিসিমণিকে যাতে কেউ প্ল্য়াকার্ড দেখিয়ে বলতে না পারে বালি চোর, চাকরি চোর, কয়লা চোর, গরু চোর। তবে এদিন যাঁরা এসেছেন তাঁদের ৯৯ ভাগ ভোটার।’’

বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে এ দিন শুভেন্দু বোঝানোর চেষ্টা করেন, নন্দীগ্রাম আন্দোলনের উত্তরাধিকার শুধু তাঁরই। ঠাকুরনগর এবং দিঘায় মমতা যে সব মন্তব্য করেছিলেন এদিন তার প্রতিটি অভিযোগ তুলে তুলে জবাব দেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। রবিবার খেজুরির শেরখান চকে বিজেপি কর্মীদের বাড়ি ও দোকান ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। এদিন সেই প্রসঙ্গে খেজুরি থানার ওসিকে নাম ধরে হুঁশিয়ারি দেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘দু’দিন সময় দিলাম। না হলে ময়নার বাকচা যে ভাবে শান্ত করেছি। সেভাবে এখানেও করা হবে।’’

খেজুরিতে তৃণমূল নেতা ও কর্মীরা এনআইএ হেফাজতে রয়েছেন দাবি করে শুভেন্দু বলেন, ‘‘এবার ভূপতিনগরের পালা। নাড়ুয়াবিলায় এনআইএ হবে।’’ গত বিধানসভা ভোটের নিরিখে জেলায় দুটি লোকসভা আসনে বিজেপি এগিয়ে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে লোকসভা ভোটে হারানোর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আরামবাগ দখল করব। ঘাটাল জিতব। তমলুকে দেড় লাখ আর কাঁথিতে তিন লাখের বেশি ভোটে জিতব।’’

যদিও, শুভেন্দুর সভা নিয়ে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোযের বক্তব্য, ‘‘মমতাদির সভার অর্ধেক লোকও হয়নি। শুধু আত্মপ্রচার করা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement