প্রতীকী ছবি।
প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে হুগলি নদীর পাড়ে আগুন জ্বলতে দেখে প্রথমে সন্দেহ হয়নি স্থানীয় বাসিন্দাদের। ভেবেছিলেন, শীতের জন্য কেউ আগুন জ্বালিয়েছে। কিন্তু কিছুটা এগিয়ে যেতেই তাঁদের চক্ষচড়কগাছ। ধিকধিক করে জ্বলে মানুষের দুটি দেহ!
হলদিয়ার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ঝিকুরিখালি এলাকার ওই ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে শোরগোল পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে দুর্গাচক থানার পুলিশ অর্ধদগ্ধ দেহ দুটি উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, ওই দুজনকে খুন করে এখানে এনেছিল দুষ্কৃতীরা। প্রথমে নদীর পাড়ে গর্ত খুঁড়ে দেহ দুটি লোপাটের চেষ্টা চালিয়েছিল তারা। কিন্তু সকাল হয়ে যাওয়ায় দেহগুলি দ্রুত নষ্ট করার প্রয়োজন বোধ হয়। তাই দেহ দু’টিকে তরল দাহ্য ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, পুড়ে যাওয়া দেহগুলির লিঙ্গ নির্ধারণ করা যায়নি। তবে অনুমান, মৃতদের মধ্যে একজন মহিলা। ময়নাতদন্তের জন্য দেহ দুটি হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের পরিচয়ও জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। স্থানীয় কাউন্সিলর ভক্তিপ্রসাদ বলিদা বলেন, ‘‘স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবরটা পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। দেখি, দুটি দেহ জ্বলছে। দুর্গাচক থানাকে খবর দেওয়া হয়। ওরা দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।’’ পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দেহ দুটি পরিচয় জানা যায়নি। সেগুলি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, ঝিকুরিখালি এলাকায় হুগলি নদীর তীর প্রায় জনশূন্য থাকে। রাত্রিবেলা ওই এলাকায় মানুষের যাতায়াত থাকেই না। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অন্ধকার এবং মানুষের আনাগোনা কম থাকায় ওই এলাকা ধীরে ধীরে দুষ্কৃতীদের আখড়ায় পরিণত হচ্ছে। কয়েকদিন আঘেল গেওকালিতেও এক ইঞ্জিনিয়ারের পোড়া দেহ উদ্ধার হয়েছেলি। এলাকায় এমন ভাবে দেহ উদ্ধারের ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন আশেপাশের বাসিন্দারা।
গেঁওখালি ও ঝিকুরখালির নদীর ধার থেকে মৃতদেহ উদ্ধার নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার বলেন,
‘‘দুটি পৃথক ঘটনা। দুটি ঘটনার সঙ্গে যোগ নেই। নদীর ধারে পুলিশি নজরদারি সব সময়ের জন্যই রয়েছে। নিরাপত্তার ব্যাপারে আরও কয়েকটি পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেগুলি নিয়ে আলোচনা চলছে।’’