জেলার পথে জোড়া কাঁটায় হয়রানি

একদিকে কলকাতায় বামফ্রন্টের ব্রিগেড, অন্যদিকে কাঁথি শহরে তৃণমূলের সমাবেশ। দু’য়ের জাঁতাকলে পড়ে দিনভর বাস-ট্রেকারের অভাবে হয়রান হতে হল রাস্তায় বের হওয়া মানুষজনকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৪৬
Share:

বাসস্ট্যান্ডে বাসের অপেক্ষায়। রবিবার দিনভর দেখা গিয়েছে এমনই ছবি। তমলুক হাসপাতাল মোড়ে। নিজস্ব চিত্র

একদিকে কলকাতায় বামফ্রন্টের ব্রিগেড, অন্যদিকে কাঁথি শহরে তৃণমূলের সমাবেশ। দু’য়ের জাঁতাকলে পড়ে দিনভর বাস-ট্রেকারের অভাবে হয়রান হতে হল রাস্তায় বের হওয়া মানুষজনকে।

Advertisement

রবিবার রাজ্যের বিরোধী ও শাসকদলের সমাবেশে দলীয় সমর্থকদের নিয়ে যাওয়ার জন্য তোলা হয়েছিল বিভিন্ন রুটের কয়েকশো বেসরকারি বাস। যার জেরে এদিন সকাল থেকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়া-মেচেদা, নন্দীগ্রাম-মেচেদা, বাজকুল-এগরা, তমলুক-পাঁশকুড়া প্রভৃতি সড়কে বাসের সংখ্যা অনেক কমে যায় বলে অভিযোগ। ফলে রাস্তায় বেরিয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে বাসের জন্য দীর্ঘক্ষণ ধরে অপেক্ষা করতে গিয়ে নাজেহাল হতে হয়েছে।

জেলার বাসমালিক সংগঠনগুলির হিসেব অনুযায়ী, জেলার বিভিন্ন সড়কে কাজের দিনে গড়ে প্রায় ১২০০ বেসরকারি বাস চলাচল করে। রবিবার ছুটির দিনে এর মধ্যে প্রায় ৩০ শতাংশ বাস তুলে নেওয়া হয়। অর্থাৎ রবিবার গড়ে সাড়ে ৮০০ বাস চলে। কিন্তু এ বার রবিবার একই সঙ্গে বামেদের ব্রিগেড ও কাঁথিতে তৃণমূলের সমাবেশে সমর্থকদের নিয়ে যাওয়ার জন্য জেলায় বিভিন্নরুটে চলা প্রায় সাড়ে ৫০০ বাস তুলে নেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে বামেরা প্রায় আড়াইশোটি এবং তৃণমূল প্রায় তিনশোটি বাস নিয়েছিল। এর ফলে যে অল্প সংখ্যক বাস চলাচল করেছে তাতে ভিড়ে ঠাসাঠাসি হয়ে যাতায়াত করতে হয়েছে বাসিন্দাদের। এতে বেশিরভাগ মানুষই গন্তব্যে ঠিক সময়ে আবার কেউ গন্তব্য়ে পৌঁছতেই পারেননি বলে অভিযোগ।

Advertisement

এদিন সকাল থেকে তমলুক শহরের হাসপাতাল মোড়, শঙ্করআড়া, মানিকতলা মোড়ে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের বাস স্টপেজে ও চণ্ডীপুর- নন্দীগ্রাম রুটের চণ্ডীপুর বাজারে বাসের জন্য দীর্ঘক্ষণ ধরে বহু যাত্রীকে অপেক্ষা করতে দেখা গিয়েছে। তমলুক জেলা হাসপাতালে রোগী ভর্তি রয়েছেন নন্দকুমার ব্লকের নামালক্ষ্যার বাসিন্দা শেখ ইমাদুলের। এদিন সকালে বাড়ি ফেরার জন্য হলদিয়াগামী বাস ধরার জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বাসের জন্য আধ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছি। কোনও বাস নেই। কখন বাড়ি ফিরতে পারব জানি না।’’ মেচেদাগামী বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তমলুকের শালগেছিয়ার অনিতা দাস। আট বছরের মেয়েকে নিয়ে কোলাঘাটে আত্মীয় বাড়িতে যাবেন। অনিতাদেবী বলেন, ‘‘অনেকক্ষণ দাঁড়ানোর পরে একটা বাস এলেও তাতে এত ভিড় ছিল যে উঠতে পারলাম ন। তাই পরের বাসের অপেক্ষায় রয়েছি। আজ ছুটির দিনেও এমন হয়রান হতে হবে বুঝতে পারিনি।’’

যাত্রীদের হয়রানির অভিযোগ মেনে নিয়েছে বাস মালিক সংগঠন। জেলা বাস ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক মহম্মদ সামসের আরেফিন বলেন, ‘‘বামফ্রন্ট ও তৃণমূলের সমাবেশের জন্য জেলার বিভিন্ন রুটের প্রায় সাড়ে ৫০০টি বাস নেওয়া হয়েছিল। ফলে অন্যদিনের তুলনায় সড়কে অনেক কম বাস চলাচল করেছে। ফলে বাসের জন্য যাত্রীদের বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করতে হয়েছে। যে বাসগুলি চলেছে তাতেও ভিড় অনেক বেশি হওয়ায় যাত্রীদের অসুবিধা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement