West Bengal Lockdown

বিধির বাঁধন ভাঙলে তুমি বর্ষবরণে!

নববর্ষের সকালে খড়্গপুর শহরে স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গের এমন চেহারা দেখে লকডাউনের কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২০ ০১:২৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

মুখ্যমন্ত্রী আগেই জানিয়েছিলেন লকডাউনের মেয়াদ বাড়ছে। মঙ্গলবার পয়লা বৈশাখের সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়ে দিলেন, লকডাউন চলবে ৩ মে পর্যন্ত। তারপরেও বিধিভঙ্গের ছবিই দেখা গেল রেলশহরের পথেঘাটে। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, আনাজ বাজারের পাশাপাশি খোলা রইল পান-বিড়ি থেকে ইডলি, বড়া, এমনকী সেলুনও। সেখানে ভিড় জমালেন মানুষ। রাস্তাতেও থিক-থিকে ভিড়!

Advertisement

নববর্ষের সকালে খড়্গপুর শহরে স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গের এমন চেহারা দেখে লকডাউনের কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। লোকজনের বাঁধনছাড়া ভাব দেখে বোঝার জো নেই যে লকডাউন এখনও চলছে। খোলা ছিল ইডলি, বড়া, চা, ঠান্ডা পানীয়ের দোকান। করোনা সংক্রমণের যাবতীয় ভয় এড়িয়েই সেখানে ভিড় করেছিলেন মানুষজন। দেদার চলেছে খাওয়া-দাওয়া। খরিদা বাজার এলাকায় সকালে পুলিশ দেখা গেলেও লাভ হয়নি। পুলিশ চলে যেতেই ফের বেড়েছে অকারণ ভিড়। খরিদা, কৌশল্যা, ইন্দা, সুভাষপল্লি এলাকায় সেলুনে চুল-দাড়ি কাটার ভিড়ও নেহাত কম ছিল না। গোটা ঘটনায় উঠেছে প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগও।

রাজ্যে লকডাউন ঘোষণার পরে গোড়ার ক’দিন প্রশাসনের কঠোর মনোভাব সচেতন করেছিল শহরবাসীকে। অনেকে সচেতন হয়ে, অনেকে ভয়ে বাড়ির বাইরে একান্ত প্রয়োজন ছাড়া পা ফেলেননি। তবে পুলিশ কিছুটা নমনীয় হতেই শহরের গলিপথে চা-দোকান খুলে চলেছে আড্ডা। বাইকে অকারণ ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে অল্পবয়সী ছেলে-ছোকরাদের। পুলিশের সঙ্গে যেন লুকোচুরি চলেছে। পথে বেরনোর কারণ জানতে চাইলেই, ওষুধ কেনা, বাজারের কথা বলেছে ওই যুবকেরা। পরিস্থিতি দেখে ‘হোম ডেলিভারি’ চালু করেছে পুলিশ। দোরগোড়ায় পৌঁছেছে আনাজ। রেল পুলিশও ওষুধের হোম ডেলিভারি চালু করেছে।

Advertisement

তারপরেও এ দিন বাজারে অসংখ্য মানুষের ভিড় করোনার আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। খড়্গপুরের মালঞ্চর বাসিন্দা কাপড় ব্যবসায়ী হৃষিকেশ গোপ বলেন, “আমরা ২১দিন ধরে ব্যবসা বন্ধ করে বসে রয়েছি। এই ত্যাগ শুধুমাত্র দেশবাসীকে সুস্থ দেখার জন্য। কিন্তু আমাদের শহরের একাংশ মানুষ যে ভাবে পুলিশের সঙ্গে লুকোচুরি খেলছে তাতে এত কষ্ট মিথ্যে হয়ে যাচ্ছে। এটা কী চলছে!” এ ক্ষেত্রে পুলিশ-প্রশাসনকে আরও কঠোর হওয়ার আবেদন করেছেন সচেতন শহরবাসী। সাঁজোয়ালের বাসিন্দা রেলকর্মী কৃশানু আচার্য বলেন, “জরুরি বিভাগ হওয়ায় আমাদের কাজে যেতে হচ্ছে। এত দিন রাস্তা ফাঁকা থাকায় কিছুটা নিরাপদ মনে হচ্ছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে যেভাবে পথে লোকজনকে ঘুরতে দেখছি তা ভাবাচ্ছে। প্রশাসনের উচিত সক্রিয় হওয়া।”

পরিস্থিতি যে হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে তা অনুমান করছে পুলিশও। এ ভাবে মানুষের পথে বেরিয়ে পড়ার বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনও উদ্বিগ্ন। খড়্গপুরের মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী বলেন, “আমিও দেখছি কয়েকদিন ধরে অপ্রয়োজনীয় কিছু দোকানপাট খুলছে। মানুষ অকারণ ভিড় করছেন। আসলে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত মানুষ মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন। এখন আর বোধহয় নিয়ম মানতে চাইছেন না।’’ তবে মহকুমাশাসকের হুঁশিয়ারি, ‘‘আমরা এটা বরদাস্ত করব না। ’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement