শান্তিকুঞ্জ। কাঁথি। নিজস্ব চিত্র
ব্যস্ত রয়েছেন বাড়ির মেজো আর ছোট ছেলে। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোট পর্বে গৃহকর্তা আর সেজো ছেলেকে কার্যত থাকতে দেখা গেল নিষ্ক্রিয়ভাবেই। পঞ্চায়েত ভোটের আগের দিনও তাই কাঁথির করকুলির 'শান্তিকুঞ্জ' রইল শান্তই।
প্রভাত কুমার কলেজের গা ঘেঁষে কাঁথির করকুলি মৌজার ‘শান্তি কুঞ্জে’ অধিকারী পরিবারের বাস। গৃহকর্তা শিশির অধিকারী এখনও খাতায় কলমে তৃণমূলের সাংসদ। মেজ ছেলে শুভেন্দু অধিকারী বিরোধী দলনেতা। সেজো ছেলে দিবেন্দ্যু অধিকারী তমলুকের তৃণমূলের সাংসদ। আর ছোট ছেলে সৌমেন্দ্যু অধিকারী বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক। যে বাড়িতে একসঙ্গে এতজন রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী থাকেন, পঞ্চায়েত ভোটের আগে শুক্রবার সেই বাড়ি যেন কার্যত নিথর। ভোটের কোনও উত্তেজনা চোখে পড়ল না এ দিন। বাইরে দু’একজন সিআরপিএফ কর্মীকে শুধু বন্দুক কাঁধে নিয়ে ঘুরতে দেখা গেল।
অথচ সব ধরনের ভোটের আগের দিনে ‘শান্তিকুঞ্জে’র চেনা ছবি কিন্তু এটা নয়। ভোট এলেই বরাবর ব্যস্ত থাকত শান্তিকুঞ্জ। গৃহকর্তা শিশিরবাবু ছাড়াও বাড়ির ছেলেরা ভোট পরিচালনার গুরু দায়িত্ব সামলান। একের পর এক গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকত শান্তিকুঞ্জের সামনে। তবে ব্যস্ততার সেই ছবিটা উধাও হতে শুরু করে ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে। শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর কালীঘাটের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছে ‘শান্তিকুঞ্জে’র। সৌমেন্দুকে সরিয়ে দেওয়া হয় পুরসভার প্রশাসক পদ থেকে। বর্ষীয়ান শিশিরবাবুর সাংসদ খারজেরও দাবি তোলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের দু-একটি সরকারি অনুষ্ঠান ছাড়া বর্তমানে কোথাও দেখা যায় না সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকেও।
তাই এবার পঞ্চায়েত ভোটের ঘোষণার পর থেকে যেটুকু ব্যস্ত থাকতে দেখা গিয়েছে এই বাড়ির সদস্যকে, তিনি হলেন শুভেন্দু। মাঝে সৌমেন্দুকেও ভোট প্রচারে দেখা গিয়েছে। তবে আগের মতো সেই জমজমাট পরিবেশ আর নেই। প্রতিবেশীরাও মানছেন, ভোট এলে আগে গমগম করত গোটা বাড়ি। নানা প্রান্ত থেকে দলের প্রার্থী-সহ নেতারা ছুটে যেতেন। কিন্তু এখন তেমনটা আর হয় না। শান্তি কুঞ্জের গৃহকর্তা শিশিরবাবু বলছেন, ‘‘আগে বহুবার তৃণমূল আমাদের উপর ভরসা করে পঞ্চায়েত ভোটে জিতেছে। এবার ওরা আমাদেরকে তাড়ানোর জন্য ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। আমি বা দিব্যেন্দু কেউ দলের পক্ষে বা বিপক্ষে প্রচার করিনি। তবে সাধারণ মানুষ যারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। তাঁদেরকে বলছি, এলাকায় যেন শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখে। ঠিকঠাক যেন তারা ভোট দেন। এই বলেই সময় কাটছে।"