তাণ্ডব: হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর। —নিজস্ব চিত্র।
ফের চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উঠল সরকারি হাসপাতালে। মৃতের পরিজনেরা হাসপাতালে ভাঙচুরও চালালেন। এ বারের ঘটনাস্থল পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি মহকুমা হাসপাতাল।
ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার। ওই দিনই সদ্য নির্বাচিত কাঁথির বিধায়ক চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) হিসাবে শপথ নিয়েছেন। মঙ্গলবার বিকেলে কাঁথিতে এসেছিলেন চন্দ্রিমাদেবী। বিনা চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর নালিশ তাঁর কানেও উঠেছে। হাসপাতাল সুপারকে ডেকে তিনি এ নিয়ে বিস্তারিত খোঁজখবরও নেন। পরে চন্দ্রিমাদেবী বলেন, ‘‘মৃতের পরিবারকে সমবেদনা জানাচ্ছি। হাসপাতালের তরফে কোনও গাফিলতি থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু হাসপাতাল ভাঙচুর সমর্থন করা যায় না।’’
সোমবার কাঁথির আঠিলাগড়ির বাসিন্দা বিদ্যুৎ ভৌমিকের বাড়িতে কাজ করতে গিয়েছিলেন পেশায় রাজমিস্ত্রি শেখ নুর মহম্মদ ( ৪০)। তাঁর বাড়ি স্থানীয় দুরমুঠ গ্রামে। কাজ করার সময় পাঁচিল ভেঙে তার নীচে চাপা পড়ে যান নূর। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্থানীয়রা। কিন্তু নুরের পরিবারের অভিযোগ, ঘণ্টা তিনেক হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় পড়ে ছিলেন তিনি। আর তাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে সোমবার রাতে হাসপাতালে যথেচ্ছ ভাঙচুর চালান মৃতের পরিজনেরা। জরুরি বিভাগের টেবিল, হাসপাতাল সুপারের অফিসে টেবিলের কাচ, বেশ কিছু আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে কাঁথি থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়। পরে হাসপাতালে যান কাঁথির এসডিপিও পার্থ ঘোষও।
মৃতের জ্যাঠতুতো ভাই আব্দুর রহমান বলেন, ‘‘আমরা হাসপাতাল সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। কোনও ডাক্তার দাদাকে দেখেনননি। আমরা এর প্রতিকার চাই।’’ ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন কাঁথি হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী চক্রবর্তী। পাশাপাশি চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। সুপার সব্যসাচীবাবু বলেন, “জখম ওই রোগীকে হাসপাতালে আনার পরে চিকিৎসক প্রসেনজিৎ সিংহ দেখেন। পাঁচিল ভেঙে তার নীচে চাপা পড়ে যাওয়ায় ওই রাজমিস্ত্রির মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল। তাতেই মৃত্যু হয়েছে।’’ তবে এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গড়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সুপার সব্যসাচীবাবু বলেন, ‘‘কমিটির কাছ থেকে রিপোর্ট পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’