এখানে বসেই চলে নজরদারি।
অজানা অচেনা গ্রামের যুবকের দেহ আজ রাজনীতিতে চর্চিত বিষয়। ঘরের মানুষটা আর নেই! শোকে নাওয়া খাওয়া ভুলেছেন আলপনা। এক বার স্বামীকে শেষ দেখার জন্য রাতদিন দাওয়ায় শুয়ে রয়েছেন। ‘নিরপরাধ’ কালিপদ বিচার পাবে তো! গুঞ্জন গোটা কনকপুরেই।নাবালিকা অপহরণে মূল অভিযুক্ত ভাইপোকে না পেয়ে কাকা কালিপদ (মদন) ঘোড়ইকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। দিনমজুর কালিপদ এলাকায় মিশুকে ও শান্ত স্বভাবের বলেই জানান প্রতিবেশীরা। বিজেপির কর্মী ছিলেন। পুলিশ গ্রেফতার করার গত ২৭ সেপ্টেম্বর কাঁথি আদালতে তুললে বিচারক চোদ্দো দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। জেল হেফাজতে অসুস্থ হয়ে গত মঙ্গলবার হাসপাতালে মারা যান কালিপদ। পরিবারের দাবি, নির্দোষ সত্ত্বেও পুলিশ মারধর করে জোর করে তাঁকে দোষী প্রমাণের চেষ্টা করে। তার জেরে জেলহাজতে থাকা অবস্থায় মৃত্যু হয়। এলাকায় সক্রিয় বিজেপি কর্মী হওয়ায় পুলিশ মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে পিটিয়ে মেরেছে বলে অভিযোগ বিজেপিরও।
সোমবার ফের মৃতদেহের ময়নাতদন্তের শুনানি রয়েছে। মঙ্গলবার থেকে রবিবার, আইনি জটিলতায় দেহ ফেরেনি গ্রামের ভিটেতে। পুলিশি অত্যাচারে নির্দোষ যুবকের মৃত্যুতে দোষী পুলিশ অফিসারের শাস্তির দাবিতে সরব কনকপুর। সেই সঙ্গে গ্রামের মানুষের প্রশ্ন, দিন আনা-দিন খাওয়া পরিবারটার কী হবে।স্বামীর শোক ভুলতে না পেরে বারে বারে মুর্ছা যাচ্ছেন আলপনা। বছর বারো ছেলেকে দেখছেন আত্মীয়রা। পাশে দাঁড়িয়েছেন পাড়ার লোকজন। তাদের কর্মীর পরিবারের উপর পাছে কোনও প্রশাসনিক চাপ না আসে সে জন্য সতর্ক বিজেপিও। দলের লোকজন সর্বক্ষণই বাড়ির সামনে রয়েছেন। এমনকী রাতেও স্থানীয় ক্লাব ঘরে থেকে নজর রাখছে লোকজন। বাইরের কেউ এলে তার পরিচয় জেনে নেওয়া হচ্ছে।
কর্মীর মৃত্যুতে দলের রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে কনকপুরে কর্মসূচি নিচ্ছে বিজেপি। সোমবারে আদালতের রায়ের দিকে তাকিয়ে গোটা গ্রামের মানুষ। তাদের আশা দোষী পুলিশের শাস্তি হবে। এলাকার বিজেপি নেতা ধ্রুব পাত্র বলেন, ‘‘মৃতের পরিবারের পাশে থেকে তাঁদের দেখভালের ব্যবস্থা করেছি। মৃতের স্ত্রী এখন মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। কোথায় কী অঘটন ঘটে যাবে তাই সব দিকে লক্ষ রাখতে হচ্ছে।’’