Indian Railways

ট্রেনে অল্প যাত্রী, তাও উধাও বিধি

কোনও কামরায় আট- দশজন যাত্রী ছিলেন। কোনও কামরায় পাঁচ- ছ’জন। দেখা গিয়েছে, কামরা ফাঁকা থাকা সত্ত্বেও কোথাও কোথাও দুই বা ততোধিক যাত্রী মুখোমুখি বসেছেন, পাশাপাশি বসেছেন। একাংশ যাত্রীর মধ্যে সুরক্ষা-বিধিগুলির ব্যাপারে বাড়তি সতর্কতা দেখা যায়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২০ ০২:১৯
Share:

অসচেতন: মাস্ক ছাড়াই ট্রেনে উঠলেন অনেক যাত্রী। খড়্গপুর স্টেশনে। ছবি: কিংশুক আইচ

সকাল সওয়া ন’টা। বুধবার মেদিনীপুর স্টেশন চত্বর কার্যত শুনশান। স্টেশনের সামনে জনা কয়েক রেল পুলিশ। টিকিট কাউন্টারের সামনে হাতেগোনা কয়েকজন যাত্রী। স্টেশনের সামনে অটো- টোটোর দেখা নেই!

Advertisement

সাধারণ সময় দিনের এই ব্যস্ত সময়ে মেদিনীপুর স্টেশনের ছবিটা এমন থাকে না। স্টেশনের বাইরে- ভিতরে যাত্রীদের বেশ ভিড় থাকে। ট্রেনে ওঠার হুড়োহুড়ি থাকে। টিকিট কাউন্টারের সামনে যাত্রীদের লম্বা লাইন থাকে। স্টেশনের সামনে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে অটো- টোটো। চা- পানের গুমটিতেও ভিড় থাকে। প্রায় সাড়ে সাত মাস পরে বুধবার থেকে ফের শুরু হয়েছে লোকাল ট্রেন চলাচল। কিন্তু পরিচিত পুরনো সেই ছবিটা এ দিন দেখা যায়নি।

রেলের এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘বুধবার মেদিনীপুর স্টেশনে তেমন ভিড় ছিল না। তুলনায় কম সংখ্যক যাত্রীই এসেছেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এদিন থেকেই ফের লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হল। ধীরে ধীরে নিশ্চয়ই আরও যাত্রী ট্রেন- সফর করবেন।’’ অনেকে মনে করছেন, মেদিনীপুরের মতো স্টেশনে রোজকারের পরিচিত ছবিটা ফিরতে পারে উৎসবের মরসুম শেষে। লোকাল চালু হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে। এ দিন যাঁরা মেদিনীপুর- হাওড়া লোকালে সফর করেছেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন অজয় মিত্র, সন্দীপ প্রামাণিকরা। অজয় বলছিলেন, ‘‘আমরা খুব খুশি। করোনা বিধি মেনেই ট্রেনে চলাফেরা করব। এতদিন বাদে ট্রেন চলাচল শুরু হল। প্রথম দিনই ট্রেনে চড়লাম। পরে পরে যাত্রী সংখ্যা নিশ্চিতভাবে বাড়বে। এই রুটে তো যাত্রী- চাপ থাকেই।’’ সন্দীপ বলেন, ‘‘ট্রেন না- থাকার জন্য আমাদের ভীষণ অসুবিধা হচ্ছিল। ট্রেন চালু হয়েছে। আমরা খুব খুশি।’’ ব্যবসার কাজে এ দিন ট্রেনে করে হাওড়া যান সন্দীপ। তাঁর কথায়, ‘‘আগে বাসে করে যেতে হত। অনেক টাকা খরচ হয়ে যেত।’’ সাধারণ কামরায় হকারেরা এখনই উঠতে পারবেন না বলে নির্দেশ রয়েছে। সেই মতো হকারেরা আসেননি। স্টেশন চত্বরে স্টল খোলার অনুমতিও এখন দেওয়া হচ্ছে না। নির্দেশ মেনে স্টলও খোলেনি।

Advertisement

লোকাল চালুর প্রস্তুতি হিসেবে রেল- কর্তৃপক্ষের তৎপরতা অবশ্য কম ছিল না। যাত্রীদের সচেতন করায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। স্টেশনের সামনে দেখা গিয়েছে সচেতনতামূলক ফেস্টুন। কোথাও লেখা, ‘নো মাস্ক, নো টিকিট’। কোথাও লেখা, ‘নো মাস্ক, নো এন্ট্রি’। নির্দিষ্ট দূরত্বে যাত্রীদের দাঁড়ানোর জন্য সাদা রঙের গণ্ডি কাটা হয়েছে। স্টেশনের বাইরে- ভিতরে ছাড়াও এমন গণ্ডি কাটা হয়েছে টিকিট কাউন্টারের সামনে। এ দিন অবশ্য সর্বত্র গণ্ডির সংখ্যা থেকে লোক কম ছিল। স্টেশনে ঢোকা- বেরোনোর নির্দিষ্ট পথ করা হয়েছে। সেই পথে রেল পুলিশের নজরদারি ছিল। থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা ছিল। অল্প সংখ্যক যাত্রী এসেছেন। তাও যাত্রীদের একাংশের মধ্যে অসচেতনতা দেখা গিয়েছে। যার ফলে শিকেয় উঠেছে সুরক্ষা বিধি।

এ দিন ট্রেনের কামরাগুলি কার্যত ফাঁকাই ছিল। কোনও কামরায় আট- দশজন যাত্রী ছিলেন। কোনও কামরায় পাঁচ- ছ’জন। দেখা গিয়েছে, কামরা ফাঁকা থাকা সত্ত্বেও কোথাও কোথাও দুই বা ততোধিক যাত্রী মুখোমুখি বসেছেন, পাশাপাশি বসেছেন। একাংশ যাত্রীর মধ্যে সুরক্ষা-বিধিগুলির ব্যাপারে বাড়তি সতর্কতা দেখা যায়নি। রেলের এক আধিকারিকের আশ্বাস, ‘‘আচরণবিধি কঠোরভাবে পালিত হচ্ছে কি না তা দেখতে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।’’ রেলকর্মী শিলাদিত্য রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা যাত্রীদের সব ধরণের সহযোগিতা করছি। আরপিএফ নজরদারি চালাচ্ছে। কোনও অসুবিধা নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement