পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
এসেছিলেন নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে। মিছিল শেষে পথসভায় বলতে গিয়ে তৃণমূলের মহাসচিব তথা দলের তরফে ঝাড়গ্রাম জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সহ পর্যবেক্ষক পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাংসদের থেকে নয়া আইন নিয়ে চাইলেন জবাবদিহি। ফিরে গেলেন লোকসভা ভোটের ফলাফলে। বললেন, ‘‘উন্নয়ন যদি মাপকাঠি হয়, তাহলে বিরবাহার হারার কথা ছিল না। মানুষের কল্যাণ যদি বড় কথা হয়, তা হলে তৃণমূল প্রার্থীর হারার কথা ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও হেরেছে।’’
গত লোকসভা নির্বাচনের সময়েও ঝাড়গ্রাম জেলার দায়িত্বে ছিলেন পার্থ। ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী বিরবাহা সরেনে হারিয়ে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী কুনার হেমব্রম। বিরবাহাকে প্রার্থী করা নিয়ে সে সময় আদিবাসী সমাজের মধ্যে ফাটল দেখা গিয়েছিল। পার্থ সেসময় অভিযোগ করতেন, বিজেপিই বিভাজন তৈরি করছে। লোকসভা ভোটের পর পার্থের বদলে ঝাড়গ্রামের দায়িত্ব পান শুভেন্দু অধিকারী। সম্প্রতি ফের সহ পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পেয়েছেন পার্থ। নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় এ দিনের মিছিলই ছিল নয়া দায়িত্বপ্রাপ্তির পর তাঁর প্রথম রাজনৈতিক কর্মসূচি। সেখানে এসে পার্থ বললেন, ‘‘সর্বনাশ কিন্তু আপনারাই ডেকে আনলেন। আপনারাই কুমির ডেকে আনলেন। এখন আপনার জমি থাকবে কি-না, আপনার ভিটে থাকবে কি-না সেটাই প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে বিজেপি।’’ সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘‘আমরাও অনেক সময় সত্য কথা বলি না। খেসারত দিতে হয় সাধারণ মানুষকে।’’
পার্থ মিছিলে হাঁটেননি। মিছিলে একটি হুড খোলা জিপে পার্থ, জেলা সভানেত্রী বিরবাহা সরেন, বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার সুকুমার হাঁসদা, বিধায়ক দুলাল মুর্মু, চূড়ামণি মাহাতোরা ছিলেন। শহরের পৌর ময়দান থেকে পাঁচমাথার মোড় পর্যন্ত মিছিল হয়। পরে পাঁচমাথার মোড়েই হয় পথসভা। সেখানে কেন্দ্রীয় আইনের বিরোধিতায় কেন তৃণমূল পথে নেমেছে সেই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে পার্থ বলেন, ‘‘এমপি থাকলে ভাল হতো, তাঁকে পাশে রেখে উত্তর চাইতাম।’’ এর জবাবে সাংসদ কুনার বলেন, ‘‘পার্থবাবু পরের বার জানিয়ে আসুন। প্রকাশ্যে কথা হবে।’’
দলের একতা প্রসঙ্গে পার্থকে বলতে শোনা যায়, ‘‘কী হবে মহাসচিব হয়ে, কী হবে আমাদের শিক্ষামন্ত্রী থেকে যদি মানুষই না থাকে তাহলে এগুলোর কোনও মূল্য আছে?’’ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তাঁর মন্তব্য, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে কেউ নেই। তাঁর মুখেই মানুষের ভরসা। সেই ভরসাতেই চলতে হবে।’’