Jhargram

পার্থ এড়ালেন শুভেন্দু প্রসঙ্গ, গুরুত্ব নয় ছত্রধরকেও

শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে জল্পনার মধ্যেই তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক হয়েছেন ছত্রধর। মেদিনীপুরে মমতার মঞ্চে উপস্থিতির পরে সক্রিয়তা বাড়িয়েছেন ছত্রধর। তাঁর এই গুরুত্ব বৃদ্ধিতে নিজেদের ‘কোণঠাসা’ মনে করছেন অনেক নেতা-নেত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:৫৭
Share:

ঝাড়গ্রামের সভায় পার্থ। নিজস্ব চিত্র।

ছত্রধর মাহাতোকে সম্প্রতি মেদিনীপুরের জনসভায় নিজে ডেকে নিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কি বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছেন ছত্রধর? দলের অন্দরে উঠছিল প্রশ্ন। মঙ্গলবার ঝাড়গ্রামে এসে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানালেন, দলের কাজ সবাই মিলেমিশে করছেন। বাড়তি কেউ দলের মুখ নন।

Advertisement

তৃণমূলের মহাসচিব জানিয়েছেন, ছত্রধরের পাশাপাশি কাজ করছেন জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাহাতো, জেলা চেয়ারম্যান বিরবাহা সরেন, বিরবাহার স্বামী তৃণমূলের এসটি সেলের রাজ্য সভাপতি রবিন টুডুও। এঁরা সকলেই দলের অন্দরে পার্থ ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত। ঘটনাচক্রে পার্থ যখন অজিত, বিরবাহা, রবিনদের ‘কাজ’ স্মরণ করাচ্ছেন তার ঘন্টা দু’য়েক আগে ঝাড়গ্রাম শহরে ‘চোখে পড়ার মতো’ মিছিল ও জমায়েত করে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন রবিন টুডু বিরোধী ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের একাংশ। জমায়েত হয়েছে মেদিনীপুরেও।

শুভেন্দু অধিকারীকে নিয়ে জল্পনার মধ্যেই তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক হয়েছেন ছত্রধর। মেদিনীপুরে মমতার মঞ্চে উপস্থিতির পরে সক্রিয়তা বাড়িয়েছেন ছত্রধর। তাঁর এই গুরুত্ব বৃদ্ধিতে নিজেদের ‘কোণঠাসা’ মনে করছেন অনেক নেতা-নেত্রী। জঙ্গলমহলের দায়িত্ব কখনও থেকেছে পার্থের কাঁধে। কখনও শুভেন্দু নিয়েছেন সে দায়িত্ব। আবার কখনও দায়িত্বের বাঁটোয়ারা হয়েছে ওই দুই নেতার মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে এ দিনই শহরের অফিসার্স ক্লাবের মাঠে পার্থের সভা ডাকা হয়।

Advertisement

কেন্দ্রীয় কৃষি বিল প্রত্যাহারের দাবিতে সেই সভা ছিল দুপুর ১টায়। কিন্তু শহরের ছোট মাঠের সভাস্থলটি দুপুর দু’টোতেও ভরেনি। পার্থ আগে চলে এলেও ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্সে অপেক্ষা করেন। অন্যদিকে, আদিবাসী সংগঠনের দীর্ঘ মিছিল শহর পরিক্রমা করে জেলাশাসকের দফতরের সামনে পৌঁছয় পৌনে দু’টো নাগাদ। সেখানে বিক্ষোভ সভায় দাবি (রাজ্যের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে পঞ্চম তফসিলের আওতায় আনা, সাঁওতালি ভাষায় অলচিকি লিপিতে সুষ্ঠু শিক্ষা-পরিকাঠামো দাবি, ভুয়ো এসটি সার্টিফিকেট বাতিল ইত্যাদি) পূরণ না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেয় আদিবাসী সংগঠনটি। অন্যদিকে, পার্থের সভাস্থলে শেষ মুহূর্তে লোক ভরাতে দেখা যায় শহর তৃণমূলের সভাপতি প্রশান্ত রায়কে। তিনটে নাগাদ মঞ্চে আসেন পার্থ।

সভা শেষে প্রশ্নের জবাবে পার্থ জানিয়ে দেন, অজিত, বিরবাহারা সবাই মিলে জেলায় সংগঠন দেখছেন। কেউ ভোটের মুখ নন। পারগানা মহলের রবিন বিরোধী গোষ্ঠীর মিছিলের প্রসঙ্গে পার্থের জবাব, ‘‘আমরা বাস্তবসম্মত সমস্ত বিষয়গুলি পর্যালোচনা করি। কারা কী করছেন, আমার অতকিছু জানা সম্ভব নয়।’’ এ দিন পার্থের কাছে শুভেন্দু প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে মহাসচিব শুভেন্দুর নাম না করে বলেন, ‘‘কেউ কেউ হয়তো অন্য কাজে ব্যস্ত আছেন। আমার এখানে মন্তব্য করা সাজে!’’

সন্ধ্যায় ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্সে দলের জেলা নেতা-নেত্রীদের নিয়ে ঘরোয়া বৈঠক করেন পার্থ। ঝাড়গ্রাম গ্রামীণ ব্লকে ছত্রধরের অনুগামী নরেন মাহাতো ব্লক সভাপতি হয়েছেন। ওই ব্লকে সাংগঠনিক কাজ ভালমতো হচ্ছে না বলে ছত্রধরের প্রতি ঊষ্মাপ্রকাশ করেন পার্থ। বেলিয়াবেড়া ব্লকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মেটাতে নেতৃত্বকে হস্তক্ষেপ করতে বলেন মহাসচিব। পরে ছত্রধর, জেলাশাসক আয়েরা রানি ও পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌরকে নিয়ে আলাদা করে কথাও বলেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement