শিলদার বাড়িতে অনিকেত মাহাতোর বাবা অপূর্বকুমার ও মা তারারানি মাহাতো। ফাইল চিত্র।
অনশনে অসুস্থ ছেলে আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুজোর মধ্যেই সেই জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোকে দেখে গেলেন বাবা অপূর্বকুমার মাহাতো ও মা তারারানি। তাঁরা কিছুটা উদ্বিগ্ন, তবে বিচলিত নন। শুক্রবার কলকাতায় গিয়ে ছেলেকে দেখে আসার পরে সোমবার অপূর্ব বলেন, ‘‘ছেলেকে দেখে এসেছি। ন্যায্য বিচারের দাবিতে এই আন্দোলনে জুনিয়র চিকিৎসদের পাশে আছি।’’
আর জি করের ঘটনায় জুনিয়র চিকিৎসকদের অন্যতম মুখ হলেন ঝাড়গ্রামের অনিকেত। শিলদার বাড়িতে থাকেন তাঁর বাবা ও মা। অনিকেতের দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। অপূর্ব বলছেন, “বৃহস্পতিবার রাতে বিনপুর থানার পুলিশ এসেছিল। অনশনজনিত কারণে ছেলের অসুস্থতার খবর জানিয়ে পুলিশের তরফে আমাকে অনুরোধ করা হয়, ‘ছেলেকে ফোন করে বোঝান, নয়তো আমাদের সঙ্গে চলুন কলকাতায় গিয়ে ছেলের সঙ্গে দেখা করে কথা বলবেন’।” অপূর্ব ও তারারানি পুলিশকে স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাঁরা কোনওভাবেই হস্তক্ষেপ করবেন না। তাঁদের ছেলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। অপূর্ব বললেন, “ওখানে সিনিয়র চিকিৎসকরা আছেন। তাঁরা দেখছেন।” তারারানির কথায়, “চিন্তা হচ্ছে। তবে ন্যায়বিচারের দাবিতে ছেলে আন্দোলন করছে। ওর প্রতি আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস আছে।” অপূর্বদের পড়শি এক শিক্ষকও জানালেন, পাড়ার সকলে অনিকেতের আন্দোলনের পাশে আছেন।
অনিকেতের বাবা অপূর্বকুমার মাহাতো অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী। মা তারারানি সংসারের কর্ত্রী। শিলদা রাধাচরণ বিদ্যামন্দির থেকে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়ার পর ঝাড়গ্রাম শহরের কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশন থেকে বিজ্ঞান বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন অনিকেত। এরপর জয়েন্ট দিয়ে এসএসকেএম মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস করেন। এখন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে অ্যানাস্থেসিয়ায় এমডি করছেন অনিকেত।
অপূর্ব জানালেন, ছোটবেলা থেকেই অনিকেত প্রতিবাদী। আর জি কর আন্দোলনে ছেলের ভূমিকায় বাবা-মা দু'জনেই গর্বিত। মাহাতো দম্পতি বলছেন, “অভয়ার পরিবার বিচার পাক। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের দাবিগুলি মেনে নিয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ করুক রাজ্য সরকার।’’