নেই হেলমেটের বালাই। ঘাটাল শহরে। ফাইল চিত্র
৮ আসনের ছোট পুলকার। সেটাই ১৪- ১৬ জন পড়ুয়া নিয়ে তীব্র গতিতে ছুটে যায়। পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে এই ছবি নতুন নয়। সম্প্রতি রাজ্যে একাধিক পুলকার দুর্ঘটনার পরেও সচেতনতা ফেরেনি। অভিভাবকেরা বিনা হেলমেটেই বাইক কিংবা স্কুটি করে সন্তানদের স্কুলে পৌঁছে দেন। কেউ কেউ নিজে হেলমেট পরলেও সন্তানকে পরান না।
ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা পরিমল দে যেমন মানছেন, ‘‘মেয়েকে বাইকে করে স্কুলে পৌঁছতে যাই। হেলমেট পরা হয় না। মেয়ে তো হেলমেট পরতেই চায় না। ঝুঁকির ব্যাপার তো থেকেই যায়।’’ মেদিনীপুরের একটি বেসরকারি স্কুলের অধ্যক্ষ সত্যব্রত দোলই বলেন, ‘‘অভিভাবকেরা সকলে সমান সচেতন নন। তাই অনেক পড়ুয়ার মাথায় হেলমেট থাকে না। আমরা অভিভাবকদের সচেতনও করি। ছেলেমেয়েকে হেলমেট পরিয়েই স্কুলে নিয়ে আসার নোটিসও দেওয়া হয়েছিল। আবার এমন নোটিস দেওয়া হবে।’’ শহরের অলিগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি সুব্রত সরকারের মতে, "অভিভাবকেরা সচেতন না হলে কড়া পদক্ষেপ করেও বিশেষ কিছু হবে না।"
জেলায় পুলকারকে আলাদা লাইসেন্স দেওয়ার ব্যবস্থা নেই। নজরদারির অভাবে বাড়তি পড়ুয়া নিয়েই চলে গাড়ি। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পরিবহণ আধিকারিক বিশ্বজিৎ মজুমদার বলেন, ‘‘পুলকারে বেশি পড়ুয়া না তোলার কথা বারেবারে জানানো হয়েছে। এবার অভিযানে নামা হবে।’’ মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষ জানান, অটো- টোটোর মতো ছোট গাড়ি করেও অনেকে স্কুলে যায়। গাড়িগুলোয় অতিরিক্ত যাত্রী থাকলে পদক্ষেপ করা হয়।
অভিভাবকদের একাংশের যদিও দাবি, পুলকার সম্বন্ধে স্কুল- কর্তৃপক্ষকেই খোঁজখবর রাখতে হবে। কারণ পড়ুয়ারা তো স্কুলেই পড়তে যায়। পরিবহণ দফতর বা পুলিশ- প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলকার ধরা হয় না। গাড়িগুলির ফিটনেস সার্টিফিকেটও দেখা হয় না। মেদিনীপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় কুণ্ডু বলেন, ‘‘চাকরি সূত্রে সকালে বাড়ি থেকে বেরোতে হয়। বাধ্য হয়ে মেয়েকে ছোট গাড়িতে স্কুলে পাঠাই। যে ভাবে দুর্ঘটনা ঘটছে, তাতে উদ্বেগ থাকেই।’’ ঝাড়গ্রামের এক প্রাথমিক স্কুলের সম্পাদক তিমির মল্লিকের দাবি, পুলকারের একটি নির্দিষ্ট নীতি করা হোক।
এক অটো চালকের ক্ষোভ, ‘‘কোনও কোনও সময়ে বাবা- মায়ের অনুরোধেই বেশিজনকে গাড়িতে নিতে হয়।’’ মেদিনীপুরের অটো মালিক সংগঠনের সম্পাদক শেখ সিরাজ বলেন, ‘‘আমরা অটো চালকদের সতর্ক করেছি। কোনও স্কুলের ছেলেমেয়েকে অটোর সামনে না বসানোর কথা জানিয়েছি।’’