প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। কিন্তু তৃণমূল সরকারের ওই কর্মসূচির প্রচারে রামনগরে বাড়ি বাড়ি যেতে দেখা যাচ্ছে বিরোধী দলের নেতা ও পঞ্চায়েত সদস্যদেরও।
আগামী বিধানসভা ভোটকে পাখির চোখ করে রাজ্য সরকারের ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। তার পাল্টা হিসাবে বিজেপি শুরু করেছে ‘আর নয় অন্যায়’ কর্মসূচি। ওই কর্মসূচিতে গ্রাম থেকে শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন গেরুয়া শিবিরের সব স্তরের নেতারা। এর মধ্যেই একেবারে ব্যতিক্রমী ছবি ধরা পড়েছে রামনগর-১ ব্লকের তালগাছাড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে। পূর্ব মেদিনীপুরে ২২৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে একমাত্র এই পঞ্চায়েতটিই বিজেপি প্রভাবিত এবং বিরোধী দ্বারা পরিচালিত। কিন্তু এখানেই বিজেপি, বাম এবং নির্দল পঞ্চায়েত সদস্য নিজেদের বুথে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির প্রচার চালাচ্ছেন।
স্থানীয় নহরিয়া বুথের সিপিএমের টিকিটে জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য রাজকুমার ভূঁইয়া বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার জন্য আবেদনের ফর্ম পঞ্চায়েত অফিস থেকে সংগ্রহ করতে হচ্ছে। ওই ফর্ম কবে দেওয়া হবে, সে ব্যাপারে নিজের সংসদের ভোটারদের জানিয়ে দিচ্ছি।’’
একই গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বাড় সোলেমানপুর গ্রামে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচির ফর্ম অনেকের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে স্থানীয়ভাবে জানা গিয়েছে। সেখানে বিজেপি’র পঞ্চায়েত সদস্য বাসুদেব তলার কথায়, ‘‘এলাকায় মাইকে করে প্রচার চলানো হচ্ছে। সাধারণ মানুষ যাতে কোনও প্রকল্প থেকে বঞ্চিত না হয়, সে জন্য আমরা সকলের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি।’
গত পঞ্চায়েত ভোটে জেলার সবক’টি গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলে গিয়েছে। তবে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট তালগাছাড়ি-১ পঞ্চায়েতে তৃণমূল পেয়েছিল ছ’টি আসন। বাকি চারটি পেয়েছিল বিজেপি, দু’টি পেয়েছিল নির্দল এবং একটি মাত্র আসনে জয়ী হয় সিপিএম। বিধানসভা ভোটের আগে শাসক দলের ‘দুয়ারে কর্মসূচি’কে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বাম, বিজেপি কেউই। কিন্তু, এখন সেই দলের নেতারা তৃণমূলের কর্মসূচির প্রচার করছেন, সেটা অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না।
এমনটা কেন?
এ ব্যাপারে নির্দল হিসাবে জয়ী স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃপ্তি পুষ্টি বলছেন, ‘‘এলাকার সকলে যাতে রাজ্য সরকারের প্রকল্পগুলি ঠিকমত ভোগ করতে পারেন, তা দেখার মূল দায়িত্ব পঞ্চায়েত সদস্যদের। সেই কথা ভেবে পঞ্চায়েতের কাজকর্ম করছি। রাজনীতি নয়।’’ দলের এবং বিরোধী অন্য দলের পঞ্চায়েত সদস্যদের ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকে কার্যত সমর্থন করেছেন বিজেপি’র জেলা (কাঁথি) নেতৃত্ব।
বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার যে সব প্রকল্পের কথা দুয়ারে কর্মসূচিতে প্রচার করছে, তার প্রত্যেকটিতে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে অর্থ দেয়। তাই ওইসব প্রকল্প নিয়ে দলের পঞ্চায়েত সদস্যেরা প্রশাসনিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সাধারণ মানুষের কাছে যেতেই পারেন। আমরা চাই সাধারণ মানুষের উন্নয়ন। আর তৃণমূল চায় প্রচার এবং সরকারি প্রকল্প থেকে কাটমানি খেতে।’’