—প্রতীকী চিত্র।
ফের হাতির হানায় মৃত্যু ঝাড়গ্রামে। এ বার খড়্গপুর বনবিভাগের অধীন সাঁকরাইল থানার কলাইকুন্ডা রেঞ্জের তুঙ্গাধুনা গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। মৃতের নাম স্বপন মাহাতো (২৬)। এই নিয়ে ১০ দিনে ঝাড়গ্রামে চার জনের প্রাণ গেল হাতির আক্রমণে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় গাড়িচালক স্বপন শনিবার রাতে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময় গ্রামের চকের কাছে একটি হাতির সামনে পড়ে যান তিনি। হাতিটি তাঁকে শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছাড় মেরে পা দিয়ে পিষে দেয়। স্থানীয় বাসিন্দারা চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে এসে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। রবিবার ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ মর্গে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মুহুর্তে খড়্গপুর বনবিভাগের অধীন বিভিন্ন জঙ্গলে ৭৩টি হাতি রয়েছে। এর মধ্যে কলাইকুন্ডা রেঞ্জের জটিয়ার জঙ্গলে ২৪টি হাতি রয়েছে। বারডাঙা বিট এলাকাতেও একদল হাতি রয়েছে। যে হাতিটির হানায় স্বপনের মৃত্যু হয়েছে, সেটি ওই দলেরই একটি হাতি। পথ ভুলে তুঙ্গাধুনায় ঢুকে পড়েছিল। কয়েক দিন ধরেই ঘোরাফেরা করছিল ওই এলাকায়।
মৃত যুবকের কাকা জয়ন্ত মাহাতো বলেন, ‘‘স্বপন গাড়িচালকের কাজ করতেন। শনিবার রাতে গাড়ি রেখে হেঁটে বাড়ি ফিরছিল। সেই সময় হঠাৎ করে একটি দলছুট হাতি আক্রমণ করে ওকে।’’ খড়গপুরের ডিএফও মণীশ যাদব বলেন, ‘‘একটি দলছুট হাতির হানায় এক জনের মৃত্যু হয়েছে। সরকারি নিয়ম মেনে পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। হাতিটির উপর নজর রাখা হচ্ছে । হাতির দলটিকে অন্যত্র পাঠানেরও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’
গত ১৫ অগস্ট ঝাড়গ্রাম শহরে পাঁচটি হাতির একটি দল ঢুকে পড়েছিল। হাতির দলের হানায় মৃত্যু হয় শহরের বিদ্যাসাগরপল্লী এলাকার বাসিন্দা অনুপ মল্লিকের (৫৪)। তারপর শনিবার ভোরে ঝাড়গ্রাম থানার অন্তর্গত পশরো গ্রামে হাতির হানায় চাঁদ খিলাড়ির (৬১) মৃত্যু হয়। গত মঙ্গলবার সকালে ঝাড়গ্রাম থানার আঁধারিসল গ্রামে হাতির হানায় প্রাণ হারান খগেন পাতর (৪৬) নামে এক ব্যক্তি। স্বাধীনতা দিবসে শহরে ঢুকে পড়া হাতিগুলিকে জঙ্গলে পাঠানোর সময় হুলা পার্টির জ্বলন্ত শলাকায় বিদ্ধ হয়ে একটি স্ত্রী হাতির মৃত্যুও হয়েছে। তা নিয়ে রাজ্য জুড়ে শোরগোলও পড়েছে। ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতারও করেছে বন দফতর। পরে তাঁদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।