বিজয়কৃষ্ণের রহস্যমৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গল ও বুধবার উত্তাল হয়েছে ময়না-সহ গোটা পূর্ব মেদিনীপুর। নিজস্ব চিত্র।
বিজেপির বুথ সভাপতি বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়াকে অপহরণ করে খুনের অভিযোগে বুধবার গভীর রাতে স্থানীয় তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যকে আটক করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, আটক তৃণমূল সদস্যের নাম মিলন ভৌমিক। বিজেপি নেতার রহস্যমৃত্যু তিন দিন পর প্রথম এক জনকে আটক করেছে পুলিশ।
ময়নার গোড়ামহল গ্রামের বিজেপির বুথ সভাপতি বিজয়কৃষ্ণকে (৬০) সোমবার বিকেল নাগাদ দিনের আলোয় প্রকাশ্যে মারধর হয় বলে অভিযোগ। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গল ও বুধবার উত্তাল হয়েছে ময়না-সহ গোটা পূর্ব মেদিনীপুর। এর পরেই বুধবার রাতের দিকে এই খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যকে আটক করেছে ময়না থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, বিজয়কৃষ্ণের স্ত্রী লক্ষ্মী ময়না থানায় যে ৩৪ জনের নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন, সেই তালিকায় ২৬ নম্বরে নাম রয়েছে মিলনের। বুধবার গভীর রাতে পুলিশি অভিযান চালিয়ে মিলনকে তাঁর বাড়ি থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তবে, ঘটনার সময় মিলন উপস্থিত ছিলেন না বলেই দাবি তৃণমূলের। তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে বলে তৃণমূল নেতারা দাবি করেছেন।
বিজেপি সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার কলকাতার কমান্ড হাসপাতালে মৃত বিজয়কৃষ্ণের দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। তার পর বিজেপি নেতার মৃতদেহ নিয়ে ময়নায় যাবেন বিজেপি নেতারা। ইতিমধ্যেই ময়নায় বৃহস্পতিবার মিছিলের ডাক দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। ময়না ব্রিজ থেকে শুরু করে তিন মাথার মোড় ঘুরে সেই মিছিল চলে যাবে বিডিও অফিসের সামনে। এই মিছিলের মাধ্যমে ময়নায় বিজেপির শক্তি প্রদর্শিত হবে বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু। বিজেপির একাংশের দাবি, ময়নাতদন্তের পর নির্দিষ্ট সময়ে মৃতদেহ চলে এলে তা নিয়েই মিছিল করা হবে। তার পর দলীয় নেতারা মৃতদেহে শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার মৃতের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকার চেক দিয়েছেন। দলীয় সূত্রে খবর, এই ঘটনাকে অস্ত্র বানিয়ে ভবিষ্যতে বিজেপি বড়সড় আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলেই দলীয় সূত্রে খবর।
ওই ঘটনার তিন দিন পরে এখনও উত্তপ্ত পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না। শুভেন্দু এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার সকাল থেকে ১২ ঘণ্টার বন্ধের ডাক দিয়েছিলেন। বিজেপির ডাকা বন্ধ সফল করতে ময়না বিধানসভার বিভিন্ন এলাকায় পথ অবরোধে নেমেছিলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। বিজেপির কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পুলিশের গাড়ি ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। পরে অবশ্য ময়না থানার পাশাপাশি জেলা সদর থেকে আসা বিশাল পুলিশবাহিনী পথে নেমে ব্যারিকেড সরিয়ে অনেকগুলি রাস্তা খুলে দেয়। এই নিয়ে অবরোধকারীদের সঙ্গে বচসা বাধে পুলিশের। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন তমলুকের এসডিপিও-র নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনীও।