Wall collapsed

ভাত খাওয়ার সময় ধসে পড়ল মাটির ঘর! বাঁকুড়ার পর ঝাড়গ্রামেও দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু বৃদ্ধের

বাঁকুড়ায় মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে তিন শিশু এবং এক বৃদ্ধার মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। একই ঘটনা ঘটল ঝাড়গ্রামের জামবনিতেও।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২৩ ২০:২৬
Share:

—নিজস্ব চিত্র।

বাঁকুড়ায় মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে তিন শিশু এবং এক বৃদ্ধার মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। একই ঘটনা ঘটল ঝাড়গ্রামের জামবনিতেও। শনিবার কাপগাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের হাতিয়াশুলি গ্রামে প্রবল বৃষ্টিতে মাটির দেওয়াল ধসে প্রাণ গেল এক বৃদ্ধের। মৃতের নাম শ্যামাপদ নায়েক (৬০)। রবিবার দুপুরে ঝাড়গ্রাম জেলা পুলিশ মর্গে ময়নাতদন্তের পর মৃতের দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সরকারি নিয়ম মেনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বিনপুরের তৃণমূল বিধায়ক দেবনাথ হাঁসদা।

Advertisement

নিম্নচাপের জেরে গত দু’-তিন ধরেই কখনও হালকা-মাঝারি, কখনও ভারী বৃষ্টি হচ্ছে ঝাড়গ্রামে। শনিবার নিজের মাটির ঘরের বারান্দায় বসে ভাত খাচ্ছিলেন শ্যামাপদ। স্ত্রী, ছেলে বৌমা, নাতি-নাতনি ছিল ঘরের ভিতরে। পরিবার সূত্রে খবর, সেই সময় আচমকাই একটি দেওয়াল ভেঙে পড়ে। তার নীচেই চাপা পড়েন শ্যামাপদ। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানেই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। বৃদ্ধের ছেলে হাবু নায়েক জানান, বাবা বারান্দায় বসে ভাত খাচ্ছিলেন। তখনই বারান্দার একটি দেওয়াল ভেঙে পড়ে। ছেলে বলেন, ‘‘আমি দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাই। আমাদের মাটির বাড়িটি অনেক পুরনো। এই ক’দিন ধরে নিম্নচাপের বৃষ্টির জন্য মাটির দেওয়াল ধসে পড়ল। পরিবারের সবাইকে নিয়ে বাড়িতে থাকতে এখন ভয় করছে। প্রশাসন পাশে দাঁড়ালে তা হলেই আমরা রক্ষা পাব।’’

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বিনপুর বিধানসভার বিধায়ক দেবনাথ হাঁসদা বলেন, ‘‘বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি। পরিবারের পাশে আমরা রয়েছি। সরকারি নিয়ম-নীতি মেনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়া হবে।’’

Advertisement

শনিবারই বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে বাড়ির দেওয়াল ভেঙে তিন শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ওই জেলার ছাতনাতেও একই ভাবে মৃত্যু হয়েছে এক বৃদ্ধার। এই দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যুর দুই ঘটনা এখন রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের অন্যতম ‘অস্ত্র’ হয়ে উঠেছে দিল্লিতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে দু’দিনের কর্মসূচিতে। বিষ্ণুপুরে মৃত তিন শিশুর পরিবারের লোকেদের রবিবার দিল্লি নিয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক তথা তৃণমূলের দাবি, দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যুর ঘটনাই হল ‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা’র সাম্প্রতিকতম উদাহরণ। কারণ এই পরিবারগুলি কেন্দ্রের আবাস যোজনার টাকা পায়নি। দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেওয়ার সময় অভিষেক বলেন, ‘‘তিনটি ফুলের মতো শিশু মারা গিয়েছে। মাটির কাঁচা দেওয়াল ভেঙে মারা গিয়েছে তারা। এর দায় কার? বিচারব্যবস্থার কাছে আবেদন করেছি। এই ঘটনার পূর্ণ তদন্ত হওয়া উচিত। যারা কথায় কথায় জনস্বার্থ মামলা করেন, সেগুলি তো আর এখন জনস্বার্থ মামলা নেই, সেগুলি সবই রাজনীতির মামলা হয়ে গিয়েছে। তাদের প্রশ্ন করছি, ১০০ দিনের টাকা কেন বন্ধ, আবাসের টাকা কেন বন্ধ। তা নিয়ে ক’টা জনস্বার্থ মামলা হয়েছে? পরিবারের এত শোকের দিনেও এরা এক কাপড়ে দিল্লি যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। কুর্নিশ জানাই এই ভাইদের। বেদনাদায়ক ঘটনার পর আমার সঙ্গে দেখা করে দিল্লি যাব বলে জানিয়েছে। এই ভায়েদের জন্য প্রতিবাদে আমরা দিল্লিতে সরব হব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement