Coronavirus in Midnapore

হতশ্রী সেফ হোম, ফিরে গেলেন নার্স

করোনা আক্রান্তদের রাখার জন্য তৈরি সরকারি সেফ হোমের এমনই হতশ্রী দশা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২০ ০১:৫৬
Share:

সরকারি সেফ হোমের বেসিনের অবস্থা এমনই। নিজস্ব চিত্র

ঘরময় ধুলো, এক পাশে ডাঁই করে রাখা উচ্ছিষ্ট শালপাতার থালা, জলের খালি বোতল। অপরিচ্ছন্ন শয্যা, শৌচাগারও ব্যবহারের উপযুক্ত নয়।

Advertisement

করোনা আক্রান্তদের রাখার জন্য তৈরি সরকারি সেফ হোমের এমনই হতশ্রী দশা। তাই শনিবার রাতে সেফ হোমে পাঠিয়েও ফিরিয়ে আনা হল সংক্রমিত এক নার্সকে। উপসর্গহীন ওই নার্সকে পরে ঝাড়গ্রাম জেলার করোনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অল্প কয়েকদিনেই দুশো ছুঁয়েছে ঝাড়গ্রামের করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা। তারমধ্যেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের ছবিটা সামনে আসায় অস্বস্তিতে প্রশাসন। অরণ্যশহরের এক ব্যবসায়ীও করোনায় আক্রান্ত হলেন। শনিবার আরটিপিসিআর পরীক্ষায় তাঁর রিপোর্ট পজিটিভ হওয়ায় তাঁকে করোনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটির ওই নার্স ও এক টেকনিশিয়ান করোনা পজ়িটিভ হয়েছেন জানা যায় শনিবার। তারপরই নার্সকে সাঁকরাইল ব্লকের পাথরায় কর্মতীর্থ ভবনের সরকারি নিভৃতাবাসে পাঠানো হয়। আর ওই কর্মীকে পাঠানো হয় ঝাড়গ্রাম ব্লকের মানিকপাড়ায় একটি সরকারি স্কুলভবনের নিভৃতাবাসে। সূত্রের খবর, সেফ হোমের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ দেখে অসুস্থবোধ করেন ওই নার্স। তারপর তাঁকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এতে প্রশ্ন তুলেছেন সেফ হোমে থাকা অন্য আক্রান্তের পরিজনেরা। তাঁদের প্রশ্ন, যেখানে হাসপাতালের নার্স থাকতে পারলেন না, সেখানে বাকি সংক্রমিতেরা থাকবেন কী করে!

Advertisement

জেলা সুপার স্পেশালিটির সিসিইউ-এর পুরুষ কর্মীকে মানিকপাড়ায় যে সেফ হোমে রাখা হয়েছে সেখানেও একই রকম পরিস্থিতি। ওই কর্মীকেও ফিরিয়ে আনা হবে বলে সূত্রের খবর। এ ক্ষেত্রে অভিযোগ, রোগীদের সেফ হোমে পাঠিয়েই দায় সারছে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের লোকজন। নজরদারির অভাবে গোটা চত্বর একটাই অপরিষ্কার যে সেখানে থাকা এক অর্থে অসম্ভবই। সংক্রমণের আশঙ্কায় সাফাই কর্মীরা কাজ করতে চান না।

রোগীর পরিজনদের দাবি, আক্রান্তদের পলিথিন প্যাকেটে খাবার দেওয়া হয়। অচ্ছুতের মতো আচরণ করা হয়। সিপিএমের জেলা সম্পাদক পুলিনবিহারী বাস্কে নিজে চিকিৎসক। তিনি বলেন, ‘‘জেলার সরকারি সেফ হাউসগুলিতে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। পরিকাঠামোও নেই। ওখানকার অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে গেলে রোগীরা আরও অসুস্থ হয়ে পড়বেন।’’ সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সজল বিশ্বাসও বলছেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালের একজন সংক্রমিত নার্স যদি নিভৃতাবাসে থাকতে না পারেন, তাহলে করোনা আক্রান্ত সাধারণ মানুষ কী ভাবে সেখানে থাকবেন?’’ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের অবশ্য দাবি, ‘‘সেফ হোমে কোনও সমস্যার অভিযোগ জানা নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement