বিনা মাস্কেই গড়বেতার সর্বমঙ্গলা মন্দিরে। নিজস্ব চিত্র।
চন্দ্রকোনা রোড: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার তৃতীয় ঢেউ আসন্ন। কেন্দ্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রক উৎসবের মরসুমে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সব রাজ্যকেই নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্য সরকারও করোনা বিধি মেনে চলতে নির্দেশ দিচ্ছে বারবার। তবুও হুঁশ ফেরার ইঙ্গিত নেই! বাঙালির সেরা উৎসব আয়োজনের শুরুতেই গড়বেতার তিনটি ব্লক ঘুরলে অন্তত বিধি ভাঙার সেই ছবিই বারবার সামনে আসছে। গড়বেতা, গোয়ালতোড়, চন্দ্রকোনা রোড ব্লক এলাকায় দুর্গোৎসবের আমেজ শুরু হয়ে যায় বিশ্বকর্মা পুজো থেকেই। আর তার শুরুতেই বিনা মাস্কে দেদার চলছে ঘোরাঘুরি, কেনাকাটা।
চন্দ্রকোনা রোডে বিশ্বকর্মা পুজোর জাঁক থাকে প্রতি বছরই। করোনার জন্য গত বছর সেই আড়ম্বর কম ছিল। এ বার করোনার সংক্রমণ কমার ইঙ্গিত পেতেই রাস্তায় মানুষের ভিড়, জটলা, আড্ডা দেখা গিয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় বিশ্বকর্মা পুজোর মণ্ডপগুলিতেও দেখা গিয়েছে দর্শনার্থীদের ভিড়। মুখে মাস্ক না থাকা মানুষের সংখ্যাই বেশি ছিল রাস্তায়। অনেকের থুতনিতে ঝুলেছে মাস্ক। পুজো উদ্যোক্তা এক গ্যারাজ মালিক বলেন, ‘‘মাইকে বারবার করোনা বিধি মেনে মণ্ডপে আসার কথা বললেও, কে শোনে কার কথা!’’ গোয়ালতোড়েও ছবিটা ছিল একই রকম। বিশ্বকর্মা ঠাকুর দেখতে বিনা মাস্কেই বেরোতে দেখা গিয়েছে অনেককেই। গড়বেতার আমলাগোড়া এলাকায় আয়োজক বা দর্শনার্থী কারও মুখেই মাস্ক দেখা যায়নি।
শুক্রবার ছিল গড়বেতার সর্বমঙ্গলা মন্দিরের ‘পুণ্যাহ’ অনুষ্ঠান। মূলত এ দিন থেকেই দুর্গোৎসব শুরু হয়ে যায় এই প্রাচীন মন্দিরে। করোনা বিধি মেনে মন্দিরে প্রবেশে অনুমতি থাকলেও, মন্দিরের বাইরে বিনা মাস্কে ভক্তদের ভিড় দেখা গিয়েছে। মন্দিরের ট্রাস্ট বোর্ডের সম্পাদক সত্যগোপাল বাজপেয়ী বলেন, ‘‘কোভিড বিধি মেনে মাস্ক পড়ে মূল মন্দিরে প্রবেশে অনুমতি ছিল, ভিড় এড়াতে প্রসাদ বিলির স্থান বাড়ানো হয়।’’ এরই সঙ্গে পুজোর কেনাকাটাও শুরু হয়ে গিয়েছে গড়বেতার তিনটি ব্লকে। বড় বড় দোকানগুলি পুজোর হাল ফ্যাশনের জামাকাপড় আনতে শুরু করেছে। কেনাকাটাও চলছে। চন্দ্রকোনা রোড, গড়বেতার অনেক দোকানে মাস্ক না পড়েই চলছে কেনাকাটা। চন্দ্রকোনা রোডের এক স্বাস্থ্যকর্তার আক্ষেপ, ‘‘করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের মুখে আমরা। তবুও মানুষের হুঁশ না ফিরলে কী আর করা যাবে।’’
গড়বেতা ২ ব্লকের বিডিও কৃষ্ণনির্মাল্য ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘করোনা বিধি মেনে চলতে বারবার সচেতনতার প্রচার করা হচ্ছে, উৎসবের মরসুমের শুরুর থেকেই এই প্রচার চলছে। তবুও কিছু মানুষ অসচেতন হয়েই ঘোরাফেরা করছেন।’’ জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বিনা মাস্কে রাস্তায় দেখলেই পাকড়াও করা হচ্ছে, উৎসবের মরসুমে আরও কড়াকড়ি করা হবে।’’